মনজু চৌধুরী॥ কমলগঞ্জ উপজেলার শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানে স্বামী কর্তৃক প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে নির্যাতন ও প্ররোচনায় বিষপানে হত্যার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগানের আক্কল মিয়ার মেয়ে নাজমিন বেগম (২৮) এর সাথে প্রায় ৮ বছর আগে আদমপুর ইউনিয়নের কাটাবিল গ্রামের মন্তাজ মিয়ার ছেলে মো. হাতিম মিয়ার বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে নানা অজুহাতে নাজমিনকে নির্যাতন করতে থাকে। এরই মধ্যে হাতিম নানা চলচাতুরী করে নাজমিনকে প্রবাসে (দুবাই) পাঠিয়ে দেয়। নাজমিন প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার রোজগারে সব টাকা হাতিমের কাছে পাঠাতো। হাতিম নাজমিন প্রবাসে থাকার সুযোগে তার অজান্তে আরো একটি বিয়ে করেন। নাজমিন এই ঘটনা জানতে পেরে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে হাতিমের বাড়ীতে গেলে তাকে বাড়ীতে প্রবেশ করতে না দিয়েই তাড়িয়ে তার বাবার বাড়ী পাঠিয়ে দেয়।

এ ঘটনার পর নাজমিন বাদী হয়ে মৌলভীবাজার আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর সুচতুর হাতিম নানা প্ররোচনা দিয়ে নাজমিনকে ম্যানেজ করে মামলা প্রত্যাহার করিয়ে নেয়ার পর আবারো প্রতারনার ও মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

৬ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৩টায় মদনমোহনপুর চা বাগানের আব্দুল আলীর চায়ের দোকানে নাজমিন ও হাতিমের মধ্যে কথাবার্তা হয়। এক পর্যায়ে হাতিম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এই অপমানে সহ্য করতে না পেরে নাজমিন কীটনাশক পান করে। তখন স্থানীয় এলাকাবাসী নাজমিনকে দ্রুত উদ্ধার করে প্রথমে কমলগঞ্জ ও পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তার অবস্থার অবনতি হলে সিলেট ওসমানি হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ এপ্রিল নাজমিন মারা যায়। ওই রাতেই লাশের সুরতহাল রির্পোট শেষ করে লাশ বাড়ীতে এনে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহতের স্বামী হাতিম আলীর সাথে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে নিহত নাজমিনের বড় ভাই কামাল মিয়া জানান, আমরা কমলগঞ্জ থানায় শারীরিক নির্যাতন ও বিষপানের প্ররোচনা দিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুিত নিচ্ছি। আমার বোনের সঠিক বিচার চাই।

এ ব্যপারে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *