দেশে ডলারের সংকট বেড়েই চলছে, দিন দিন বাড়ছে দাম। ডলারের বিপরীতে পতন হচ্ছে টাকার মানের। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে আজ (মঙ্গলবার) ডলার বিক্রি করেছে ৯২ টাকা ৮০ পয়সা দরে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

মঙ্গলবার (১৪ জুন) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ৯২ টাকা ৮০ পয়সা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আজ সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। এক‌দিন আগেও প্রতি ডলা‌র বিক্রি করা হয়েছে ৯২ টাকা ৫০ পয়সায়। আর গত মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমল ৬ টাকা ৩৫ পয়সা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, মঙ্গলবার বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে প্রতি ডলার ৯২ টাকা ৮০ পয়সা দরে ৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। ডলার বিক্রির কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় (রিজার্ভ) ৪১ দশমিক ৪৪ বিলিয়নে নেমে এসেছে।

বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৩ থেকে ৯৫ টাকা, নগদ ডলার বিক্রি করছে ৯৬ থেকে ৯৭ টাকা আর ব্যাংকের বাইরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয় ৯৭ থেকে ৯৮ টাকা।

এর আগে, দেশে বেশি বেশি রেমিট্যান্স আনতে গত ২ জুন ডলারের দামের সীমা তুলে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকগুলো নিজেরাই ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারবে। ওই সময় আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার ছিল ৮৯ টাকা। এরপর কয়েক দফায় মার্কিন এ মুদ্রাটির দাম বেড়ে ৩ টাকা ৮০ পয়সা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপর থেকে বড় ধরনের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে গিয়ে ডলার সংকট শুরু হয়। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।

২০২১ সালের আগস্টের শুরুতেও আন্তঃব্যাংকে প্রতি ডলারের মূল্য একই ছিল। ৩ আগস্ট থেকে দু’এক পয়সা করে বাড়তে বাড়তে গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথমবারের মতো ৮৫ টাকা ছাড়ায়। এ বছরের ৯ জানুয়ারিতে এটি বেড়ে ৮৬ টাকায় পৌঁছে। এরপর ২২ মার্চ পর্যন্ত এ দরেই স্থির ছিল। পরে গত ২৩ মার্চ আন্তঃব্যাংকে আরও ২০ পয়সা বেড়ে ৮৬ টাকা ২০ পয়সায় দাঁড়ায়। ২৭ এপ্রিল আ‌রও ২৫ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা। ১০ মে বাড়ে আরও ২৫ পয়সা। ১৬ মে বাড়ে ৮০ পয়সা। ২৩ মে বাড়ে ৪০ পয়সা। ফলে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সায়। এরপর গত ৩১ মে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। ৪ জুন ৮৯ টাকা ৯০ পয়সা, ৫ জুন ৯১ টাকা ৫০ পয়সা ও ৬ জুন দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৯৫ পয়সায়। আর ৭ জুন ডলারের দাম গিয়ে ঠেকে ৯২ টাকায়। এরপর ৮ জুন ৫০ পয়সা কমে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা হয়। পরের দিন ৯ জুন আবার ৯২ টাকা হয়। ১৩ জুন ৯২ টাকা ৫০ পয়সায়। আর সর্বশেষ আজ আন্তঃব্যাংক মুদ্রা বাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ৯২ টাকা ৮০ পয়সায়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *