বিনোদন ডেস্ক :: বাংলা চলচ্চিত্রের পালে হাওয়া লাগিয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন পরিচালিত ‘হাওয়া’ সিনেমা। এ সিনেমার ‘সাদা সাদা কালা কালা’ গানটি প্রকাশের পরপরই তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। ফলে মুক্তির আগে থেকে হাওয়া সিনেমা নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়।
দেশে দর্শকদের মন মাতানো সিনেমাটি এবার একযোগে মুক্তি পেতে যাচ্ছে আমেরিকা ও কানাডার ১১৭টি থিয়েটারে। এটি কানাডা ও আমেরিকার থিয়েটারে বাংলাদেশি কোনো সিনেমার মুক্তির হিসাবে রেকর্ড।
এর আগে ‘পাপ পূণ্য’ চলচ্চিত্রটি সর্বাধিক ৯১টি থিয়েটারে (কানাডা ৭, আমেরিকা ৮৪) মুক্তি পেয়ে শীর্ষে ছিল। তবে ‘হাওয়া’র কাছে এবার শীর্ষস্থান হারাচ্ছে ‘পাপ পূণ্য’।
এদিকে, বাংলাদেশের সিনেমা ইতিহাসের সর্ববৃহৎ থিয়েট্রিক্যাল রিলিজ নিয়ে উত্তর আমেরিকায় মুক্তি পেতে যাওয়া ‘হাওয়া’ বেশ কিছু অভাবনীয় ঘটনারও জন্ম দিয়েছে।
এবারই প্রথম উত্তর আমেরিকার কোনো বড় সিনেমা চেইন (কানাডার দ্বিতীয় বৃহত্তম সিনেমা চেইন, ল্যান্ডমার্ক সিনেমাস) নিজেরা উদ্যোগী হয়ে তাদের দুটি থিয়েটারে বাংলাদেশের কোনো সিনেমা (হাওয়া) চালানোর জন্য পরিবেশককে (স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো) খুঁজে বের করেছে। এর আগে এমনটা ভাবাও স্বপ্নের মতো ছিল।
আন্তর্জাতিক পরিবেশক ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’র প্রেসিডেন্ট মো. অলিউল্লাহ সজীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের উন্মাদনার ওপর করা একটা প্রতিবেদন ল্যান্ডমার্কের নজরে আসে।
পরে যখন তারা দেখেন বাংলাদেশের সিনেমা কানাডায় নিয়মিত থিয়েট্রিক্যালি রিলিজ হয়, তখন তারা আর বসে থাকেনি। ‘হাওয়া’র জন্য তারা ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’কে খুঁজে পেতে এমনকি কানাডার একটি প্রভিন্সিয়াল গভর্মেন্টের দ্বারস্থ হয়।
এদিকে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনো সিনেমার অগ্রিম টিকিট মুক্তির এক সপ্তাহ আগে থেকে বিক্রি করা শুরু করেছে দুটি সিনেমা চেইন।
কানাডার প্রধান সিনেমা চেইন ‘সিনেপ্লেক্স এন্টারটেইনমেন্ট’ ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্স সিনেমাস’ গত ২৫ আগস্ট রাত থেকেই বিক্রি করছে ‘হাওয়া’র টিকিট। থিয়েটার চেইনগুলো এমনটা সাধারণত করে খুব হাইপওয়ালা হলিউড/ইন্ডিয়ান সিনেমার বেলায়।
‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’ প্রধান অলিউল্লাহ সজীব বলেন, ‘কানাডা ও আমেরিকার বাংলা সিনেমার দর্শকদের সিনেমাটির প্রতি বেশ ভালো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। সাতদিন আগেই মাল্টিপ্লেক্সগুলোর হাওয়ার টিকিট বিক্রি শুরু করা অভূতপূর্ব ও দারুণ গৌরবের।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবেশনায় ১৮ নম্বর সিনেমায় উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসে একটি দারুণ কিছুর পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের সিনেমাকে অনেক ওপরে নিয়ে যেতে পারে।
প্রযোজনা সংস্থা সান মিউজিক অ্যান্ড মোশন পিকচার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে ‘হাওয়া’ সিনেমার নির্বাহী প্রযোজক অজয় কুমার কুন্ডু বলেন, হাওয়া আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে বলে বিশ্বাস করি।
অন্যদিকে সোশাল মিডিয়ায় ‘হাওয়া’ টিমের পক্ষ থেকে উত্তর আমেরিকার দর্শকদের থিয়েটারে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সিনেমার শিল্পী ও কুশলীরা।
কানাডা-আমেরিকায় হাওয়ার স্ক্রিন কাউন্ট : মোট স্ক্রিন (থিয়েটার) ১১৭টি। যার মদ্যে কানাডা ১৩ ও আমেরিকায় ১০৪টি। ‘এএমসি’ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সিনেমা চেইন। সেখানে স্ক্রিন সংখ্যা ২৫টি। ‘রিগ্যাল/সিনেওয়ার্ল্ড’-এ ৪০, সিনেমার্কে ৩৪, সিনেপ্লেক্সে ১১, হারকিনসে ৪, ল্যান্ডমার্কে ২ ও শো-কেসে একটি।
