রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মহলের শোক

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা ও সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সাজেদা চৌধুরীর এপিএস মো. শফিউদ্দীন বলেছেন, সাজেদা চৌধুরী বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রবিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান।
সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য। তিনি কয়েক বছর ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত ২৮ আগস্ট তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলাতে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ ও মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী। ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর তার স্বামী মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপপ্রাপ্ত হন এবং একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ গার্ল-গাইড অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ওমেন অব দি ইয়ার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

রাজনৈতিক জীবন : ১৯৫৬ সাল থেকে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৯–১৯৭৫ সময়কালে তিনি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা গোবরা নার্সিং ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭২-১৯৭৫ সময়কালে বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালক, ১৯৭২-১৯৭৬ সময়কালে বাংলাদেশ গার্ল গাইডের ন্যাশনাল কমিশনার এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সাল থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়কের দায়িত্বও তিনি পালন করছেন।
তিনি ফরিদপুর-২ (সালথা নগরকান্দা) থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এ আসন থেকে বেশ কয়েকবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জাতীয় সংসদের উপনেতা হন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক : আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
রোববার রাতে পৃথক শোকবার্তায় তাঁরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে তিনি মরহুমের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক : আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোববার দিবাগত রা‌তে এক শোকবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দলের অন্যতম কাণ্ডারির ভূমিকা পালন করেছিলেন।
ড. মো‌মেন ব‌লেন, দেশ ও জনগণের কল্যাণে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অবদান ও ত্যাগ জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে তথা দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। মরহুম সাজেদা চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দাফন বনানী কবরস্থানে : আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে। সোমবার বাদ আছর তাকে দাফন করা হবে। সাজেদা চৌধুরীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ রায়হান এসব তথ্য জানান।
বেনজীর আহমেদ রায়হান জানান, সোমবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সাজেদা চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে বাদ জোহর তার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দায় দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *