‘বিদেশি পর্যবেক্ষক আমরা অ্যালাউ করব। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো লুকোচুরি হয় না। চাইলে যেকোনো দেশ পর্যবেক্ষণ করতে পারে।’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার ঘোষণা বিষয়ে সিলেটে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

আজ রোববার সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছয়টি ই-গেট স্থাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যাদের নিজেদের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ, তাদের বাংলাদেশ নিয়ে মাতব্বরি করার দরকার নেই।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইসের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়টি তুলে ধরলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই দেশে এভারেজ ৫০ এর নিচে ভোট দেয় আর আমাদের দেশে ৭২ থেকে ৮০ ভাগ লোক ভোট দেয়। আমাদের দেশের নির্বাচন খুবই স্বতঃস্ফূর্ত। ওই সব দেশে নির্বাচনের এক মাসে আগে প্রচার শুরু হয় আর আমাদের এক বছর আগে থাকে শুরু হয়।’

গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিশেষ ব্রিফিংয়ে নেড প্রাইস বলেন, বাংলাদেশে প্রকৃত, স্বচ্ছ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমরা এই চাওয়াকে স্বাগত জানাই। তবে এসব কথা এবং কাজের মধ্যে মিল আছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকার ৭২ পার্সেন্ট জনগণ মনে করে আমেরিকার ডেমোক্রেসি খুব দুর্বল। আর দেশটির রিপাবলিকান পার্টির ৭৭ পার্সেন্ট মনে করে যে, গত প্রেসিডেন্সি ইলেকশন ছিল ফ্রড ইলেকশন এবং দে হ্যাভ স্টোলেন দ্য ইলেকশন। এই রকম তাদের মনমানসিকতা। আমাদের দেশেও কিছু লোক এই ধরনের আছে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশের সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। যখন (সত্তরের নির্বাচনে) আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল, তাদের সরকার গঠন করতে দিল না। তখনই তো আমরা আন্দোলন শুরু করলাম। এরপর জেনোসাইড হওয়ার পর আমরা স্বাধীনতা ঘোষণা করলাম। এ দেশের প্রত্যেক মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এই প্রিন্সিপলগুলো আছে। সুতরাং অন্যদের মাতব্বরি করে আমাদের পরামর্শ দেওয়ার দরকার নেই। তারা নিজেদের মুখ আয়নায় দেখুক।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। সুতরাং ওই সম্পর্কে তাঁরা যে বিভিন্ন সন্দেহ পোষণ করেন; তাঁদের ইতিহাস সম্পর্কে অভিজ্ঞতার অভাব, জ্ঞানের অভাব। আমি আশা করব, তাঁরা আমাদের ইতিহাস পড়ুক আর আমাদের চলার পথটা দেখুক। যেই দেশটা হচ্ছে ডেমোক্রেসির একটা কেন্দ্রবিন্দু।’

ই-গেট উদ্বোধনকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ই-গেট চালু হওয়াতে সুবিধাভোগীদের অনেক উপকারে আসবে। বিশেষ করে প্রবাসীরা দেশে এলে নানা ধরনের দুর্ভোগের মুখে পড়েন। এটি চালু হওয়ায় অনেকটা দুর্ভোগ লাঘব হবে। সিলেটের বিরাট সংখ্যক মানুষের দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে। আমাদের যারা ডুয়েল সিটিজেন আছেন, তাঁদের নো ভিসা সার্ভিস আরও বেগবান করতে হবে, যাতে করে প্রবাসীরা আরও দ্রুত এই সার্ভিস পান।’

পাসপোর্টের জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকারের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সময় মতো পাসপোর্ট না পেলে জনগণ নানা অভিযোগ করেন। তাঁদের অনেক অভিযোগ সত্য এবং অনেক অভিযোগের সত্যতা থাকে না।’ সমস্যা সমাধানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটে আরেকটি পাসপোর্ট অফিস করার তাগিদ দেন।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *