ডায়াল সিলেট ডেস্ক    মৌলভীবাজারের সূর্যের হাসি ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসার কারনে এক রুগীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার সূর্যের হাসি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন:-১। ডাঃ বদরুন নাহার রুমি (সার্জন), ২। ডাঃ কাদের (এ্যানেস্তেসিয়া), ৩। ডাঃ কামরুল ইসলাম দিপু বাদীঃ শামীম মিয়া (২৭), পিতা-মোশাহিদ মিয়া, সাং-সিদ্দেশ্বেরপুর, থানা-কমলগঞ্জ, জেলা-মৌলভীবাজার।(এসিসটেন্ট), ৪। বিথী রানী ঘোষ (প্যারামেডিক), ৫। মাহমুদুর রহমান রাজীব (ম্যানেজার), সর্ব সূর্যের হাসি ক্লিনিক, বড়হাট, সিলেট রোড, থানা ও জেলা-মৌলভীবাজার সহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জন। এতে সাক্ষী হিসেবে ১। ইশাক মিয়া (৬০), উভয় পিতা-মৃত বাদশা মিয়া, ২। রেজিয়া বেগম (৫০), স্বামী-ইসহাক মিয়া, ৩। মোঃ সুরত মিয়া (৪৫), সর্ব সাং-হিলালপুর, ১১নং মোস্তফাপুর ইউপি, থানা ও জেলা-মৌলভীবাজার এদের নাম উল্লেখ করেন।
জানা যায় উক্ত ঘটনাটি ১৭ জানুয়ারি দুপুর অনুমান ০১.০৫ ঘটিকা। ঘটনাস্থল মৌলভীবাজারের সিলেট রোডের বড়স্থ মৌলভীবাজার, সূর্যের হাসি ক্লিনিকের দুতলা ভবনে। অভিযোপত্রটি হুবহু তোলে ধরা হলো:তিনি অভিযোগপত্রে বলেন-১ ও ২নং সাক্ষী আমার শ্বশুড় শ্বাশুড়ি এবং ৩নং সাক্ষী আমার চাচা শ্বশুর হন। উপরোক্ত বিবাদীগণ মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন পৌরসভাস্থ বড়হাট, সিলেট রোড মৌলভীবাজার নামক সূর্যের হাসি ক্লিনিকের ডাক্তার হিসেবে দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছেন।
নিপা বেগম (২৫), স্বামী-শামীম মিয়া, সাং-সিদ্দেশ্বেরপুর, থানা- কমলগঞ্জ, জেলা-মৌলভীবাজার আমার স্ত্রী হয়।
গত ১৬/০১/২০২৩খ্রিঃ তারিখ সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় আমার স্ত্রীর ডেলিভারী জনিত কারনে উক্ত ক্লিনিকে নিয়ে আছি। তখন কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া বিকাল অনুমান ০৫.০০ ঘটিকার সময় অত্র ক্লিনিকে ভর্তি থাকিয়া চিকিৎসা গ্রহন করার জন্য পরামর্শ দেন। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীর সু-চিকিৎসার কথা চিন্তা করিয়া উক্ত ক্লিনিকে আমার স্ত্রীকে ভর্তি করাই। পরবর্তীতে উপরোক্ত বিবাদীগণ ইং ১৬/০১/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় আমার স্ত্রী নিপা বেগম এর সিজার সম্পন্ন করানোর জন্য রক্ত সংগ্রহ করার জন্য জানান। তখন আমি তাৎক্ষনিক রক্ত সংগ্রহ করিয়া উপরোক্ত বিবাদীদের জানাইলে তাহারা জানান রক্তের প্রয়োজন হলে আমাকে জানাবে। পরবর্তীতে ইং ১৬/০১/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় সিজার করিয়া একটি ছেলে সন্তান (জীবিত) হয়। উক্ত ছেলে আমাদের নিকট দিয়া উপরোক্ত ডাক্তারগন জানান আমার স্ত্রী রেস্ট রুমে আছে। ঘটনার কিছু সময় পূর্বে অথাৎ ইং ১৭/০১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় ৫নং বিবাদী মাহমুদুর রহমান রাজীব (ম্যানেজার) আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে বলেন আমার স্ত্রী অবস্থা খারাপ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট নিয়ে যেতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার তারিখ ও সময় ১৭/০১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় আমার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ দেখিয়া তাৎক্ষনিক প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আমার স্ত্রীকে সু-চিকিৎসার জন্য সিলেট নর্থ-ইস্ট মেডিকেলে নিয়ে যাই। উক্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়া মৃত ঘোষনা করিয়া বলেন যে উক্ত রোগী অনুমান ০২ ঘন্টা পূর্বে মৃত্যু বরণ করিয়াছে। পরবর্তীতে আমার স্ত্রী মৃত নিপা বেগম (২৫) এর এইরুপ মৃত্যুর সংবাদ ১,২ ও ৩নং সাক্ষীগন, আমার পরিবারের লোকজন সহ আত্মীয়-স্বজন পেয়ে সূর্যের হাসি ক্লিনিকে উপস্থিত হইয়া আমার স্ত্রীর মৃত্যু কারন জিজ্ঞাসাবাদ করিলে উপরোক্ত সকল বিবাদীগণ উত্তেজিত হইয়া তাহাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে। তখন বিবাদীদেরকে ১,২ ও ৩নং সাক্ষীগন, আমার পরিবারের লোকজন সহ আত্মীয়-স্বজন তাহারা গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে তাহাদের মারপিট করিতে উদ্যত হয়। এক পর্যায়ে ১,২ ও ৩নং সাক্ষীগন, আমার পরিবারের লোকজন সহ আত্মীয়- স্বজন প্রান রক্ষার জন্য ডাক চিৎকার করিলে তাহাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি হুমকি প্রদর্শন করিয়া ঘটনাস্থল হইতে চলিয়া যায়। আমার ধারনা উপরোক্ত বিবাদীদের ভুল চিকিৎসার জন্য অদ্য ১৭/০১/২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতাল মৌলভীবাজারেই আমার স্ত্রী নিপা বেগম (২৫) মৃত্যু বরণ করে এবং উক্ত মৃত্যু এড়ানোর জন্য উন্নত চিকিৎসার প্রদানের নিমিত্তে উপরোক্ত বিবাদীগন সিলেট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!
0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *