ডায়াল সিলেট ডেস্ক ॥ বড়লেখায় পূর্ব-বিরোধের জেরে থানায় মামলা দিয়ে আসামিদের বাড়িছাড়া করে তাদের রান্নাঘরে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাদী হাছিনা বেগম রানীর বিরুদ্ধে। এতে পলাতক আসামীদের হার্টের ও ব্রেইনষ্টোকের রোগি বৃদ্ধ পিতা-মাতা এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ভাই দুইদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোয়াচ্ছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিত বললেন ঘটনাটি অমানবিক।

জানা গেছে, উপজেলার পূর্ব-শংকরপুর গ্রামের সাহাব উদ্দিন ও রফিক উদ্দিনের ছেলেদের মধ্যে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। এর জেরে মঙ্গলবার সকালে রফিক উদ্দিনের ছেলে উজ্জল আহমদ বসতঘর সংলগ্ন জমিতে কাজ করার সময় সাহাব উদ্দিন তার সাথে তর্কে জড়ান। এক পর্যায়ে তিনি উজ্জল হোসেনের গালে চড় দিলে সে মাটিতে পড়ে যায়। মাটি থেকে উঠে উজ্জল সজোরে সাহাব উদ্দিনকে ধাক্কা দিলে তিনি পাশের একটি পিলাকে ধাক্কা খান। এতে তার মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। এ ঘটনায় আহত সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী হাছিনা বেগম রানী প্রতিপক্ষের আফজল হোসেন, তার ভাই প্রবাস ফেরৎ উজ্জল আহমদ, হার্টের ও ষ্টোকের রোগি বৃদ্ধ পিতা রফিক উদ্দিন, মাতা কনুরি বেগম ও বোন অনার্স পড়–য়া ছাত্রী জেরিন বেগমকে আসামী করে থানায় মামলা করেন। এতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও বু্িদ্ধ প্রতিবন্ধী ভাই মাহফুজ ইসলাম আজহার ব্যতিত সবাই আত্মগোপন করেন।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে মামলার বাদী হাছিনা বেগম স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিতের উপস্থিতিতে আসামীদের রান্নাঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে রান্নাঘরে খাবার থাকা স্বত্তে¡ও আসামীদের বৃদ্ধ বাবা-মা ও প্রতিবন্ধী ভাই দুপুর ও রাতে না খেয়ে থেকেছেন।

সরেজমিনে গেলে হাছিনা বেগম রানীর মামলার ৩ নং আসামী অসুস্থ বৃদ্ধ রফিক উদ্দিন জানান, আমার এক ছেলে মাত্র ২৭ দিন আগে কাতার থেকে দেশে ফিরেছে। আমার মেয়ে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। ঘটনার সময় আমার প্রবাস ফেরৎ ছেলে ও মেয়ে বাড়িতেই ছিল না। আমি ও আমার স্ত্রী বিছানায় ছিলাম। তবুও আমাদের আসামী করা হয়েছে। মামলার ভয়ে দুই ছেলে ও মেয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। বুধবার দুপুরে পুলিশ হাছিনা বেগম রানীর মামলার তদন্ত করেছে। পুলিশ চলে যাওয়ার পরই ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিতের উপস্থিতিতে হাছিনা বেগম আমাদের রান্নাঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। ঘরে রান্না করা খাবার থাকা স্বত্তে¡ও প্রতিবন্ধী ছেলেসহ আমরা দুপুরেও রাতে না খেয়ে থেকেছি। তালাবদ্ধ রান্না ঘরের সামনে প্রতিবন্ধী মাহফুজকে পায়চারী করতে দেখা গেছে।

এব্যাপারে জানতে বাড়িতে গিয়েও হাছিনা বেগম রানীকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইউপি সদস্য আব্দুল মুকিত জানান, তিনি মামলার বাদীকে এভাবে আসামীদের ঘরে তালা দেওয়া ঠিক হচ্ছে না বললেও তিনি তা শুনেননি। ঘটনাটি অমানবিক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর জানান, শুক্রবার তিনি মামলার অভিযোগ তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যান। তিনি ফিরে আসার পর হয়তো বাদী আসামীদের ঘরে তালা ঝুলিয়েছেন। এটা ঠিক হয়নি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *