ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজিম চৌধুরী তাকে হত্যার হুমকির প্রকাশ্য ঘোষণার অভিযোগ এনে চাচা আশিক চৌধুরীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

 

যদিও জিডির ব্যাপারে অভিযুক্ত আশিক চৌধুরী বললেন, ‘পরিবারের ঐতিহ্য ধ্বংসে শয়তান লেগেছে’।

 

জানা গেছে, সোমবার অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে সামিরার চাচাতো ভাই রাহাত চৌধুরী সিলেটের কানাইঘাট থানায় এই জিডি করেন। রাহাত চৌধুরী হারিছ চৌধুরীর আপন ভাই নজমুল হোসেন চৌধুরীর ছেলে। জিডিতে তাদের চাচা আশিক চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

 

আর আশিক চৌধুরী হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই।

 

জিডিতে উল্লেখ করা হয়, আশিক চৌধুরী ১৭ জানুয়ারি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে সামিরা তানজিন চৌধুরীকে গলাটিপে হত্যা করার কথা বলেন। এ সময় হারিছ চৌধুরীর পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়েও বিষোদ্‌গার করেন তিনি।

 

এর আগে রাহাত চৌধুরী গত ২৩ জানুয়ারি কানাইঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তবে সেটি আমলে নেওয়া নিয়ে গড়িমসি করে পুলিশ। এমন অভিযোগ রাহাতের। অবশেষে গত সোমবার অনলাইনে জিডি পাঠান। যার নম্বর ১১৭২। জিডিতে অভিযুক্ত করা হয়েছে হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে।

 

জিডির ব্যাপারে আশিক চৌধুরী তিনি বলেন, ‘আমাদের পরিবারের ঐতিহ্য ধ্বংসে শয়তান লেগেছে। তার দাবি, সারাজীবন হারিছের গোলামি করলাম আমি আর এখন অমুক-তমুক এসে উত্তরাধিকার, অভিভাবক বনতে চাইছেন। বড় ভাই হারিছ নেই, এখন আমিই অভিভাবক। অভিভাবক হিসাবে শাসনের উদ্দেশ্যে গলাটিপে হত্যার কথা বলেছি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে। চাচা হয়ে কী ভাতিজিকে শাসন করতে পারি না?’

 

গত ১৭ জানুয়ারি উপজেলার দীঘিরপাড় ইউনিয়নের রামধন গ্রামে হারিছ চৌধুরীর বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানায় শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এমন হুমকি দেন আশিক চৌধুরী। বক্তব্যের একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি হারিছ চৌধুরীর মেয়েকে ‘গলাটিপে হত্যা’র কথা বলেন। এ সময় হারিছ চৌধুরীর পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়েও বিষোদ্গার করেন তিনি।

 

এছাড়া হারিছ চৌধুরী ও তার অন্যান্য ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের ওই এতিমখানায় ঢুকতে নিষেধ করেন এবং ঢুকলে মারধর করবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। এমন বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি সিলেটসহ সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

 

মঙ্গলবার রাহাত চৌধুরী বলেন, আমি বারবার বিচারপ্রার্থী হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে ‘বিষয়টি পারিবারিকভাবে শেষ করুন’ বলে বিদায় করে দেওয়া হয়।

 

কানাইঘাট থানার ওসি গোলাম দস্তগীর বলেন, ‘পারিবারিকভাবে শেষ করুন’ এমন কথা নয়, আমরা শুধু বলেছিলাম-সামিরা বিষয়টি জানেন কিনা, না জানলে জানিয়ে জিডি করুন। জিডি হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা।

 

সিলেটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কানাইঘাট সার্কেল) আবদুল করিম বলেন, পুলিশ জিডিটি আদালতে পাঠানোর নির্দেশনা চাইবে। এরপর পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া চালানো হবে।

 

উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ জানুয়ারি রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু’র খবর জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় আসেন তার চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী। তখন তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হারিছ চৌধুরী মারা গেছেন।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *