‘কাদিয়ানীদের ঈমানবিধ্বংসী অপতৎপরতা বন্ধ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের অমুসলিম ঘোষণার’ দাবিতে সিলেটে সমাবেশ করেছে ‘উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন।

শনিবার (২৭ মে) দুপুরে নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে ‘বিভাগীয় খতমে নবুয়ত মহাসমাবেশ’ নামে এই কর্মসূচিতে লক্ষাধিক লোক অংশ নেন।

এতে ধর্মীয় নেতাদের পাশাপাশি সমাবেশের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানও এতে বক্তব্য দেন।

সমাবেশে নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হযরত মোহাম্মদ (স.) ইসলামের শেষ নবী। এরপরে যারা নবী দাবি করে তারা ইসলামের শত্রু। আমি আজকের এই সমাবেশের উলামা মাশায়েখদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করছি।

বেলা ১২টা থেকে রেজিস্ট্রারি মাঠে এই সমাবেশ শুরু হয়। তারআগে সকাল থেকে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাস ও ট্রাকযোগে সমাবেশে লোকজন আসতে থাকেন। নগর থেকে মিছিল নিয়েও আসেন অনেকে। বিশেষত সিলেট অঞ্চলের বেশিরভাগ মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই সমাবেশে যোগ দেন।

দুপুরের পরপর রেজিস্ট্রারি মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়েন জনতা। এতে আশপাশের কয়েকটি সড়কের যান চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে। এসময় উপস্থিত জনতা স্লোগান উঠে- ‘নবীর পরে নবী নাই- সংসদে আইন চাই’, ‌’কাদিয়ানীদের কাফের ঘোষণা করতে হবে’- এমন স্লোগান দিতে থাকেন। অনেকে এসব দাবির সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়েও হাজির হন সমাবেশে।

আযাদ দ্বীনি এদারায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিনের সভাপতিত্বে ‘বিভাগীয় খতমে নবুয়ত মহাসমাবেশে’ সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন পূর্ব সিলেট আযাদ দ্বীনি আরবি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা মাওলানা শায়খ আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, বেফাকুল আরাবিয়া বাংলাদেশ’র সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বরুণা, উলামা পরিষদ বাংলাদেশ’র মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মাওলানা শায়খ নুরুল ইসলাম খান সুনামগঞ্জী প্রমুখ।

বিকাল ৫টায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, আহমদিয়া মুসলিম জামাতের অনুসারীদের সুন্নি মুসলিমদের অনেকে ‘অমুসলিম’ বলে মনে করেন। আহমদিয়াদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিও দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন তারা।

ভারতের পাঞ্জাবের কাদিয়ান থেকে এই দর্শনের জন্ম বলে অনেকে এই সম্প্রদায়ের লোকজনকে কাদিয়ানী বলে থাকেন। এই সম্প্রদায়কে নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই বিরোধ রয়েছে। পাকিস্তানে আহমদিয়াদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *