ডায়াল সিলেট ডেস্ক: শ্রীমঙ্গলের হাজী কামাল হোসেন একাধারে একজন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও একজন সফল কৃষক। তিনি শখের বশবর্তী হয়ে বিদেশ ভ্রমনের সময় ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করেন। দেশে এসে নিজ লেবু বাগানে ড্রাগনের চারা রোপণ করেন। প্রথম অবস্থায় দক্ষ হাতে নাহলেও খুব যত্ন করে এসবের পরিচর্যা করেন। এ অবস্থায় ফলন দেখে বেজায় খুশি হাজী কামাল।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

তিনি জানান, এমনটি হবে আমি ভাবতেও পারিনি। লেবু বাগানে যে পরিমান খরচ হয় বিক্রয়ে অনেক সময় তার অর্ধেকও উঠে আসে না। আনারস চাষেও একই অবস্থা। তাই লেবুর পাশাপাশি পুষ্টিকর ড্রাগন ফলসহ বিদেশি অন্যান্য ফল চাষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

সঠিক পরিচর্যায় চারা রোপণের ১৮ মাসের মাথায় গাছে ফল আসে। একটি গাছে প্রতি মৌসুমে ৪০ থেকে ৬০ কেজি পর্যন্ত ফল আসে। ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি’র মাত্রা বেশি থাকায় এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মানসিক অবসাদ দূর করে এবং ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। দেশে এই ফলের দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ক্যাকটাস গোত্রীয় গাছের অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল হলো ‘ড্রাগন ফল’। বিদেশি ফল হলেও সুমিষ্ট স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই ফলটির। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে কিংবা ক্যান্সার প্রতিরোধে ড্রাগন ফলের রয়েছে শক্তিশালী ভূমিকা। প্রচুর ক্যারোটিনসমৃদ্ধ হওয়ার কারণে চোখ, হার্ট থেকে শুরু করে চুল, ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি হজমপ্রক্রিয়াকে উন্নত করায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে বাংলাদেশে ড্রাগন ফ্রুটের চাহিদা বাড়ছে, তাই উৎপাদনও বাড়ছে।

হাজী কামাল হোসেন মৌলভীবাজার জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বাসাবাড়ির ছাদে ড্রাগন চাষ হচ্ছে দেখে আমি অত্যান্ত সুন্দর ও সুস্বাধু এই ফলটি চাষ করার আগ্রহ পাই, প্রথমে আমার এক বন্ধুর পরামর্শে ও তার দেওয়া ড্রাগন ফলের চারা দিয়ে চাষ শুরু করি। প্রথম বছর চারা বড় হলে, সেসব থেকে আরও অনেক চারা উৎপাদন করেছি।

তা দিয়ে পরীক্ষামুলক ১০০ টি ড্রাগন ফলের গাছ রোপণ করি। এখন প্রায় প্রতিটি গাছে ১৫ থেকে ২০টি ফল এসেছে। খাওয়ারও উপযোগী হয়েছে অনেক ফল। ফলন দেখে আমি আনন্দিত। যেহেতু শখ করে প্রথম চাষ করেছি, ফলগুলো নিজে খাবো এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যেও বিলিয়ে দিব। আগামীতে বানিজ্যিকভাবে চাষ করার চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমার মনে হয় ড্রাগন ফল চাষ করলে চাষিরা অনেক লাভবান হবেন। শ্রীমঙ্গলের মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী। এ ফল চাষে এগিয়ে আসার জন্য তিনি অন্যান্য চাষি ভাইদের আহ্বান জানান।

এব্যাপারে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: মহিউদ্দিন জানান, ড্রাগন ফলে ভিটামিন সি’র মাত্রা বেশি থাকায় এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, মানসিক অবসাদ দূর করে এবং ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। ড্রাগন ফল চাষ অবশ্যই লাভজনক। শ্রীমঙ্গলে পাহাড় টিলায় এ ফল চাষ করলে যে কেউ লাভবান হবেন বলে আমি মনে করি। ভালো মানের চারা রোপণ করলে ফলনও ভালো মিলবে। ড্রাগন চাষে খরচও কম। গোবর ও সার প্রয়োগ এবং সঠিক নিয়মে পরিচর্যা করলেই ড্রাগনের ভালো ফলন আসবে। ড্রাগন চাষে যে কেউ পরামর্শ চাইলে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা করা হবে।

শ্রীমঙ্গলে ড্রাগন চাষ শুরু করে সফলতা বসায় মো. কামাল হোসেনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মহিউদ্দিন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *