কনওয়ে-রাবিন্দ্রর ব্যাটিং তাণ্ডব

 

স্পোর্টস ডেস্ক :: গত ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে এই ইংল্যান্ডের কাছে হেরেই শিরোপাস্বপ্ন বিসর্জন দিতে হয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। এবার চ্যাম্পিয়নদের তারা পেয়ে গেলো প্রথম ম্যাচেই, নিয়ে নিলো মধুর প্রতিশোধ।

 

হায়দরাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের রীতিমত গুঁড়িয়ে দিয়েছে কিউইরা। ২৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া পাড়ি দিয়েছে ৩৬.২ ওভারেই, ৯ উইকেট হাতে রেখে।

 

অথচ রান তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। স্যাম কারানের লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হয়ে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন উইল ইয়ং (১ বলে ০)। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা। কিন্তু এরপর ডেভন কনওয়ে আর প্রমোশন পেয়ে ওপরে আসা রাচিন রাবিন্দ্র রীতিমত রুদ্রমূর্তিতে আবিভর্‚ত হন। দুর্দান্ত সব শট খেলে ইংলিশ বোলারদের দিশেহারা করে ফেলেন তারা।

 

৮৩ বলে সেঞ্চুরি করেন কনওয়ে। তিন অংক ছুঁতে এক বল কম লাগে রাচিন রাবিন্দ্রর, যা কিনা আবার বিশ্বকাপে কিউই কোনো ব্যাটারের দ্রæততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। দ্বিতীয় উইকেটে কনওয়ে আর রাবিন্দ্র ২১১ বলে ২৭৪ রানের বিধ্বংসী জুটিতে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ওয়ানডেতে দ্বিতীয় উইকেটে নিউজিল্যান্ডের সেরা জুটি এখন এটিই। ৯৬ বলে ১১ চার আর ৫ ছক্কায় ১২৩ রানে অপরাজিত থাকেন রাবিন্দ্র। ১২১ বলে ১৫২ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংসে ১৯টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকান কনওয়ে।

 

এর আগে ২২৯ রানে ছিল না ইংল্যান্ডের ৭ উইকেট। জো রুট যখন আউট হয়ে যান, তখন বিশেষজ্ঞ ব্যাটার আর কেউ ছিলেন না। তারপরও ৯ উইকেটে ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজিই দাঁড় করিয়ে ফেলে ইংলিশরা। আহমেদাবাদে টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম। শুরুটা খারাপ ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৬ বলে ৪০ রান তোলেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো আর ডেভিড মালান।

 

মালান ধীরগতির ছিলেন। ২৪ বলে ১৪ করা এই ওপেনারকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ম্যাট হেনরি। অষ্টম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় ইংলিশরা। থিতু হয়ে গিয়েছিলেন জনি বেয়ারস্টো। ৩৫ বলে ৩৩ রান করে মিচেল স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে থামতে হয়েছে তাকেও। তবে স্বভাবজাত মারকুটে ব্যাটিং থেকে বের হতে পারেননি হ্যারি ব্রক।

 

রাচিন রাবিন্দ্রর যে ওভারে আউট হয়েছে, তার আগের তিন বলে দুটি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার। ১৬ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ২৫ করে ড্রেসিংরুমে ফেরেন ব্রæক। একশর আগে (৯৪ রানে) ৩ উইকেট হারায় ইংলিশরা। নিউজিল্যান্ডের স্পিন আক্রমণে আত্মসমর্পণ করেছেন মঈন আলিও। ব্যক্তিগত ১৭ বলে ১১ রানে গেøন ফিলিপসকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই অলরাউন্ডার।

 

১১৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে ইংলিশরা। তবে জো রুট সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম হাফসেঞ্চুরিটিও এসেছে ইংলিশ এই ব্যাটারের হাত ধরে। দলীয় ৪০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন এই ব্যাটার। দলকে ২২৭ রান পর্যন্ত নিয়ে গেছেন তিনি। ৮৬ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় ৭৭ রান করে গেøন ফিলিপসের বলে বোল্ডন হন রুট। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৭তম ফিফটি।

 

মাঝে ছোটখাটো এক ঝড় তুলে দিয়ে যান অধিনায়ক জস বাটলার। ৪২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় খেলেন ৪৩ রানের ইনিংস। এছাড়া লিয়াম লিভিংস্টোন করেন ২২ বলে ২০। ৪২তম ওভারে ইংল্যান্ড ২২৯ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর লোয়ার অর্ডারের স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ আর মার্ক উডের ব্যাটে চড়ে ২৮২ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজিই গড়েছে ইংল্যান্ড। কারান ১৪, ওকস ১১, রশিদ ১৫ আর উড করেন ১৩ রান। নিউজিল্যান্ডের ম্যাট হেনরি ৪৮ রানে নেন ৩টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার মিচেল স্যান্টনার আর গেøন ফিলিপসের।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *