ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সাদি মহম্মদ মারা গেছেন। বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যার পর রুমের দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন।

 

শিবলী মহম্মদ জানান, প্রতিদিনের মতো আজও তার বড় ভাই সংগীতচর্চা করতে বসেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ দেখেন তার ঘরের দরজা বন্ধ। এরপর ঘরের দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

 

সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেসা ২০২৩ সালের ৮ জুলাই মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ কারণে তিনি এমনটা করতে পারেন বলে সাদি মহম্মদের নিকটজনেরা মনে করছেন।

 

সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার শ্রাবণ আকাশে ও ২০১২ সালে তার সার্থক জনম আমার অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

 

সাদি মহম্মদ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে শহীদ পিতার সন্তান। তার বাবার নাম শহীদ সলিমউল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিম উল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শহীদ শেখ কামালও।

 

একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদি মহম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিমউল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদী-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ।

 

সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিমউল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিমউল্লাহকে।

 

গত বছরের জুলাই মাসে সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা যান। এরপর থেকেই নাকি নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এই সংগীত তারকা।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *