ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বিএনপি নেতাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. আবু রায়হানকে গ্রেপ্তার করতে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এসময় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুলাই ভোররাত ৩টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী হীরাকে গ্রেপ্তার করতে তার বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। এই অভিযানে বাড়িতে হীরাকে না পেয়ে তার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছোট ভাই মো. আবু রায়হানকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় পুলিশ।
হীরা মেঝো ভাই গোলাম রহমান সাগর জানান, সাদা পোশাকে একদল পুলিশ মধ্যরাতে আমার বড় ভাইকে খুঁজতে আসেন। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে বড় ভাই সচরাচর বাড়িতে থাকেন না। ওই রাতে বড় ভাইকে না পেয়ে আমার ছোট ভাইটাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। সে সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতী মোহন পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী এবং ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। তার বয়স ১৮ বছর।
সাগর দাবি করেন, বাবা মারা যাওয়ার প্রায় দেড় বছর আগে। ঘটনার রাতে মা বারবার পুলিশকে বলেছিলেন,আমার ছেলে রায়হান এইচএসসি পরীক্ষার্থী, কোনো রাজনীতি সঙ্গে জড়িত নয়। কিন্তু পুলিশ তার কথা শুনলো না। ঘরে ঢোকেই তারা আমার ছোট ভাইটাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে চলে গেলো। যাওয়ার সময় বলে গেল, কান টানলে মাথা আসে। আমার ভাইটার জীবনটাই শেষ করে দিলো।
যাওয়ার সময় ছোট ভাইয়ের এডমিট কার্ড নিয়ে যাওয়ার কথা বলে থানায়। পরে মা মায়ে ভোর ৪টায় সঙ্গে নিয়ে থানায় যাওয়ার পর পুলিশ তাদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। সকাল ১১টা পর্যন্ত থানার থাকার পর জানতে পারলাম, আরও কয়েকজনের সঙ্গে রায়হানকেও ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করলেও আদালত তা নামঞ্জুর করে রায়হানকে কারাগারে পাঠান।
রায়হানের আইনজীবী হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২১ জুলাইয়ের ১২৫০ নম্বর জিডি মূলে ৫৪ ধারায় ২২ জুলাই তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
২৪ জুলাই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে জামিন আবেদন করলে তা নাকচ করে দেয়। একইদিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন পুনর্বিবেচনার আবেদন করলেও একই আদেশ আসে। তবে তাকে জেলখানায় পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশ রায়হানকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করার পরদিন ২৩ জুলাই বন্দর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার হন হীরা।
সাগরের বলেন, হীরা ভাই বিরোধীদলের রাজনীতি করেন। তিনি গ্রেপ্তার হবেন, এটা আমরা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছি। কিন্তু আমার ছোট ভাইটার তো কোনো দোষ নেই। তার জীবনটা কেন নষ্ট হবে?