ডায়ালসিলেট ডেস্ক :১১ বছর আগের ভয়ংকর এক দিন ২৪ এপ্রিল। বাংলাদেশ তো বটেই পুরো বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনা। ওই ঘটনায় আহত-নিহতের পরিবারতো আছেই,এখনো অসংখ্য লোকের চোখে লেগে আছে বাঁচার জন্য চাপাপড়া মানুষের নিদারুণ আর্তনাদ। এক ফোটা পানি কিংবা একটু অক্সিজেনের জন্য সেই কাকুতি কানে বাজে এখনও।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

এগারশ’৩৬ জন নিহতের ওই মর্মান্তিক ঘটনায় জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল দুই হাজার ৪৩৮ জনকে। উদ্ধার কাজে সার্বিক তদারকির দায়িত্বে ছিল সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন। যার প্রধান ছিলেন সাভারের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং বা জিওসি তৎকালীন মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। বিষয়টি নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছে যমুনা টেলিভিশন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে কারাগারে থাকা সাবেক এই এসএসএফ প্রধান মুক্তি পান গত ৬ আগস্ট। তার দাবি, রানা প্লাজায় নিহতের সংখ্যা কম দেখাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, উদ্ধার কাজের একপর্যায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নির্দেশ দিলেন, অনেক তো উদ্ধার হলো এবার আটকে পড়াদের চাপা দিয়ে দাও। উদ্ধারকাজ বন্ধ করতেও নির্দেশনা দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। তবে তা বন্ধ করতে রাজি হননি তিনি। জবাবে বলেছিলেন, এটি অসম্ভব, শেখ হাসিনার নির্দেশেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছিলেন তিনি। প্রথমে তাকে জীবিত কিংবা মৃত শেষ ব্যক্তিটাকে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চালানোরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।

পরে শেখ হাসিনা তাকে বলেন, স্পেট্রা গার্মেন্টস নামে একটি গার্মেন্টস বিএনপির আমলে ধ্বংস হয়েছিলো। এবং ওই ঘটনায় মানুষ চাপা দেয়া হয়েছে কাউকে উদ্ধার করা হয়নি।

রানা প্লাজা থেকে ১৭ দিন পর জীবিত উদ্ধার হন রেশমা। আলোচিত ঘটনা সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই। আসলে কী হয়েছিল তখন! এ বিষয়ে তিনি বলেন, রেশমাকে উদ্ধারের পর অনেক কথা হয়েছে। সংসদে এটা নিয়ে প্রতিবাদও হয়েছে। কীভাবে উদ্ধার হলো কি হলো এসব জানতে চাওয়া হয়েছে। আমি নিজে এবং অন্যান্য সংগঠন থেকে বলা হয়েছিল এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা হোক। অনেক মিডিয়া টেলিভিশন আমার এবং রেশমার কাছ থেকেও ইন্টারভিউ নিয়েছিল। পরে সে একটি পাঁচ তারকা হোটেলে চাকরি করতো এসব কেউ প্রচার করেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শুধু রানা প্লাজা নয়, ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাজরীন ফ্যাশন নামে একটি পোশাক কারখানায় আগুনে অঙ্গার হন ১১৭ পোশাক-কর্মী। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছিল দুইশ’ এর মতো। হাসান সারওয়ার্দীর দাবি, তাজরীন ফ্যাশনের ঘটনার সময়ও তাকে আইন সিদ্ধ নয়-এমন নির্দেশনা দিয়েছেন সাবেক সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, প্রথমে সেনা সদরের মাধ্যমে এবং পরে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন এই লাশগুলোকে পুলিশের কাছে দিয়ে গুম করে ফেলতে হবে। আমি এর কারণ জিজ্ঞাসা করায় প্রধানমন্ত্রী বললেন গুম না করলে পরের দিন বিএনপি এবং খালেদা জিয়া লাশ নিয়ে মিছিল করবে। রাস্তাঘাট বন্ধ করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবে।

এমন আরও অনৈতিক নির্দেশনা অমান্য করায় তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের অপ্রিয় পাত্রে পরিণত হন বলে দাবি করেন ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের সাবেক এই কমান্ড্যান্ট।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *