আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ইউক্রেনের সেনা বাহিনীর হাতে আটক উত্তর কোরিয়ার এক সেনার মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার এক বিবৃতি উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানিয়েছে ইয়োনহান নিউজ এজেন্সি। কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কো বাহিনীর সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা যুদ্ধ করছে বলে যুদ্ধের শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে ইউক্রেন। তবে এর কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি দেশটি। অনলাইন বিবিসি বলছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা পিয়ংইয়ংয়ের কোনো সেনার যুদ্ধবন্দি হওয়া এটাই প্রথম ঘটনা বলে ধারণা করা হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার সেনার মৃত্যুর বিষয়টি অন্য আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে ‘গুরুতর আঘাতে’ মৃত্যু হয়েছে ওই সেনার। কিয়েভ এবং সিউলের দাবি অনুসারে রাশিয়াকে সাহায্য করার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে ১০ হাজারের বেশি সেনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। যদিও মস্কো এবং পিয়ংইয়ং এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইউক্রেনের একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক ব্যক্তির ছবি প্রকাশ হওয়ার পর স্থানীয় একটি গুপ্তচর সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে ওই ব্যক্তি ইউক্রেনের সৈন্যদের হাতে আটক হয়েছে। যুদ্ধ ভিন্ন দেশের সেনা আটক এবং হত্যার এটিই প্রথম ঘটনা। উত্তর কোরিয়ার কোনো সেনাকে বন্দী করে রাশিয়ার সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তি করা উচিত বলে মনে করেন আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের গবেষণা ফেলো ইয়াং উক। তিনি মনে করেন, বন্দীদের এভাবে হত্যা না করে বন্দি বিনিময়ের চেষ্টা করাই বেশি লাভজনক। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সাম্প্রতিক ছবিগুলো যে বিষয়টি নিশ্চিত করে সেটি হচ্ছে- কিয়েভের বিরুদ্ধে রুশ কমান্ডো হামলায় উত্তর কোরিয়ার বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনা ত্বরান্বিত হচ্ছে। তবে এ বিষয়টি উত্তর কোরিয়ার জাতীয়তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করেন ওই গবেষক। ইউক্রেন বলছে, উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের ভুয়া রুশ পরিচয় পত্র দেয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি কয়েক ফুটেজ পোস্ট করে দাবি করেছেন, নিহত উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের পরিচয় গোপন করতে তাদের মুখ পুড়িয়ে দিচ্ছে রুশ সৈন্যরা। ইউক্রেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা জানিয়েছে, রাশিয়ায় মোতায়েন করা পিয়ংইয়ংয়ের বেশ কিছু সেনা সদস্য বেশ উচ্চ পর্যায়ের। স্থানীয়ভাবে যাদের স্টর্ম কর্পস নামে ডাকা হয়। এই ইউনিটের কাজ হচ্ছে গোপনে শত্রুর ভূখণ্ডে প্রবেশ করে অবকাঠামো ধ্বংস করা এবং শত্রু পক্ষকে হত্যা করা। কুরস্ক অঞ্চলে যুদ্ধের সময় ৩ হাজারের বেশি উত্তর কোরীয় সৈন্য হতাহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেন, মস্কো ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা কোরীয় উপদ্বীপের চারপাশে ‘অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি’ আরও বাড়িয়েছে।

