তিব্বত ও ভারত হয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদে একটি বৃহৎ জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছে চীন।শনিবার (১৯ জুলাই) তিব্বতের এই প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। খবরটি নিশ্চিত করেছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া ও এনডিটিভি।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!তিব্বতে ‘ইয়ারলুং জ্যাংপো’ নামে পরিচিত এবং ভারতে ও বাংলাদেশে ‘ব্রহ্মপুত্র’ নামে পরিচিত এই নদীর ওপর নির্মিতব্য প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়েছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে।
চীন জানিয়েছে, এটি তাদের ‘কার্বন নিঃসরণ শূন্যের লক্ষ্য’ এবং তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
সিনহুয়া জানায়, নির্মিত হবে পাঁচটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র, যার ব্যয় প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
চীন জানায় তিব্বতের স্থানীয় বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ ও অন্যান্য অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ।
চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, বাঁধটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে এটি বিশ্বের বৃহত্তম বাঁধ “থ্রি গর্জেস”-এর সক্ষমতাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এদিকে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত ও বাংলাদেশ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উজানে চীনের কার্যকলাপ যেন নিম্নপ্রবাহের দেশগুলোর স্বার্থ ক্ষুণ্ণ না করে, সে ব্যাপারে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
অন্যদিকে, চীন দাবি করেছে, এই বাঁধ নির্মাণে নিচু অঞ্চলের (ভারত ও বাংলাদেশ) কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না এবং তারা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে।
তবে, পরিবেশবাদীরা বলছেন, হিমবাহনির্ভর তিব্বতের মতো সংবেদনশীল অঞ্চলে এই ধরনের মেগা প্রকল্প জলবায়ু পরিবর্তন, নদীর ইকোসিস্টেম এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাঁধের কারণে হিমবাহ গলে যাওয়ার হার বেড়ে যেতে পারে, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হতে পারে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই প্রকল্প শুধুই একটি বিদ্যুৎ প্রকল্প নয়, এটি ভূরাজনৈতিক, পরিবেশগত এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নও তুলে দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এটি ভারত ও বাংলাদেশের জন্য পানি প্রবাহ, কৃষি ও জীবিকায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

