ডায়াল সিলেট ডেস্কঃ-

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের জরুরি বৈঠকে লুণ্ঠিত পাথর সাদা পাথরে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। বৈঠকের ৫ সিদ্ধান্তের একটি ছিল সাদা পাথরকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া এবং কোয়ারি এলাকায় সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী মোতায়েন।

এরপর বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৯টায় যৌথ বাহিনী মাঠে নামে এবং রাত ১১টায়
সাদা পাথরকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে রাতের অন্ধকারেই শুরু হয়েছে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারের অভিযান। অভিযানে ভোলাগঞ্জ আশপাশের এলাকা থেকে উদ্ধার করা সাদা পাথরের স্তূপ। রাতেই সেগুলো যথাস্থানে রাখতে শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করে যৌথ বাহিনী। এসব সাদা পাথর ফেরত নেওয়া হচ্ছে যথাস্থানে। এক রাতেই ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে, জানান অভিযানিক দলের সংশ্লিষ্টরা।

এছাড়া সড়ক চৌকি বসিয়ে সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী ট্রাকগুলো তল্লাশি করতে দেখা গেছে।

এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুটপাট ঠেকানো এবং লুট হওয়া পাথর সাদা পাথরে পুনঃস্থাপনে পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সভায় গৃহীত পাঁচ দফা সিদ্ধান্ত

* জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদা পাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনীর দায়িত্ব পালন।
* গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে যৌথ বাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি।
* অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান অব্যাহত রাখা।
*পাথর চুরির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা।
* চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া।
কার্যালয়ের সিলেট কার্যালয়ের উপপরিচালক রাফী মোহাম্মদ নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে সাদা পাথর এলাকার লুটপাটের চিত্র দেখতে সরেজমিন ভোলাগঞ্জ ১০ নম্বর এলাকায় যান। তদন্ত শেষে দুদক কর্মকর্তারা জানান, সাদা পাথরে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। এতে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও স্থানীয়রা এবং প্রশাসনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, মনে করছেন তারা। তবে তদন্ত শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

দেরিতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে দুদকের এই কর্মকর্তা বলেন, সিলেট থেকে ভৌগোলিক দূরত্বের কারণে দেরিতে অভিযান চালানো হয়েছে। এটা ভৌগোলিক দিক থেকে স্থানীয় প্রশাসনের অনেক কাছে। স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল।

দুদক কর্মকর্তারা আরও বলেন-প্রতিদিন সাদা পাথর লুটপাটের বিষয়টি সারা দেশে ভাইরাল হয়েছে। বাস্তব অর্থে আমরা এখানে এসে তাই দেখলাম-সব পাথর লুটপাট করে নিয়ে গেছে। স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে জানতে পারলাম, প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক এখানে পাথর লুটপাট করেছে। এর পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন জড়িত আছে, প্রশাসনেরও ভূমিকা আছে। পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন আছে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ-কাছেই বিজিবি ক্যাম্প আছে। দুদক কর্মকর্তারা জানতে পারেন-বিজিবি ক্যাম্প থাকার পরও রাতদিন ২৪ ঘণ্টা পাথর লুট করছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার নৌকা এসে পাথর লুট করে। প্রতিটা নৌকায় ১০/১২ জন মানুষ থাকে। এত এত মানুষ গত এক বছর ধরে পাথর লুট করছে, তাহলে আর কিছু থাকে?

দুদক কর্মকর্তারা স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছেন, শুনেছেন, অনেকের নাম পেয়েছেন, যারা এই পাথর লুটের সঙ্গে জড়িত। এই ব্যক্তিগুলো ছাড়াও প্রশাসনের দায়বদ্ধতাও দেখা হবে, জানান তারা। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দাখিলের পর পরবর্তী নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করবেন। তাছাড়া স্পেশালিস্ট কোনো টিম এলে দেখা যেত, কত টাকার পাথর লুট হয়েছে। তবে কোটি কোটি টাকার তো হবেই।

স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর থেকে শুরু হয় আদালতের নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ থাকা পাথররাজ্যে লুটপাট। শাহ ভোলাগঞ্জের আরেফিন টিলা, রোপওয়ে বাংকার থেকে প্রকাশ্যে পাথর উত্তোলন করে এখন ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *