ডায়াল সিলেট ডেস্ক:-

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সিলেট বিভাগের সড়ক ও রেল যোগাযোগের দীর্ঘদিনের সংকটকে সামনে রেখে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র  আরিফুল হক চৌধুরী। আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সিলেট মহানগরের কোর্ট পয়েন্টে একটি প্রতিবাদ সমাবেশের আহ্বান জানিয়েছেন । সমাবেশে সব শ্রেণির মানুষকে  যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন।

আরিফুল হক বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে বলেন, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী অবস্থায় রয়েছে এবং মহাসড়কের সংস্কার কাজে কোন গতি নেই। তিনি বলেন, “মানুষের কষ্টের একটা সীমা আছে, সময়ের একটা ব্যাপার আছে। বছরের পর বছর ধরে এই দুর্ভোগ চলতে পারে না।”

তিনি আরও বলেন, সড়ক-রেল লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার কারণে সিলেটবাসী দিন দিন দুর্ভোগে জর্জরিত। রাস্তা খারাপ হওয়ায় পণ্য সিলেটে পৌঁছাতে দামে বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে, ফলে সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়। আরিফুল বলেন, “আমাদের প্রিয় বৃহত্তর সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান দুর্ভোগ, অনিয়ম ও চরম নৈরাজ্য আজ অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। জনগণের মৌলিক অধিকার — সহজ, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল যাতায়াতের অধিকার — আজ মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।”

আরিফুল হুঁশিয়ারি দিয়েছেন— যদি দ্রুত এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কারকাজ শুরু না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি হবে। তিনি অভিযোগ করেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে, কিন্তু সিলেটের জন্য পরিষ্কার বরাদ্দ ও উদ্যোগ নেই। তিনি বলেন, “চিটাগাং সুন্দর করবা, উত্তরবঙ্গে ব্রিজ অইব আর সিলেটরে যা খুশি করবা — এটা আর হতে দেওয়া যায় না।”

রেল ও বিমান যোগাযোগের দুরবস্থার কথাও তুলে ধরেন আরিফুল। তিনি ট্রেনে সুবিধা ও নতুন কোচ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে বলেন, “রাস্তায় রোগী মারা যাচ্ছেন; রেলও সেইম। রেল কর্তৃপক্ষ এবং যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে বলছি — রাস্তা পুনর্নির্মাণ হওয়ার আগ পর্যন্ত বিশেষভাবে দুইটি ট্রেন বরাদ্দ করা হোক ঢাকা-সিলেট রুটে এবং নতুন কম্পার্টমেন্ট দেওয়া হোক।” এছাড়া, তিনি অভিযোগ করেন যে সিলেটে টিকিট নিয়ে কম্পিউটারভিত্তিক অনিয়মের ফলে অনেকে টিকিট সংগ্রহ করে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করছেন এবং এতে সাধারণ মানুষ নীচের দিকে ভুগছে।

বিমান ভাড়ার ব্যাপারেও তীব্র আক্ষেপ প্রকাশ করে আরিফ বলেন, “রাশিদ দরে বিমান টিকিট ৩ হাজার টাকা থাকা উচিত থাকতেই ১২ হাজার টাকা করা হচ্ছে। যদি বিমান কর্তৃপক্ষ সমস্যার সমাধান না করে, তানতান (বিমানের স্বার্থান্বেষীদের) বিরুদ্ধেও জনগণ ব্যবস্থা নিবে।” তিনি এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে জনগণকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।

আরিফুল হোক চৌধুরীর আহ্বানে তিনি জানান যে— ১২ অক্টোবরের প্রতিবাদ সমাবেশে দল-মত নির্বিশেষে সাধারণ জনগণকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বৃহত্তর সিলেটবাসীর অধিকার পুনরুদ্ধার এবং টেকসই যোগাযোগ ব্যবস্থার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গঠিত হবে।

আরিফুল হকের বক্তব্য থেকে অনুযায়ী দাবীগুুলো হলো:

ঢাকা—সিলেট মহাসড়কের ত্বরিত ও সুষ্ঠু পুনর্নির্মাণ।

পুনঃনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা—সিলেট রুটে স্পেশাল ট্রেন বরাদ্দ ও নতুন বগি/কম্পার্টমেন্ট।

বিমান ভাড়া নিয়ন্ত্রণ ও টিকিট চাহিদা-সরবরাহে স্বচ্ছতা বিধান।

সিলেট অঞ্চলে বরাদ্দ ও উন্নয়নে ন্যায্য অংশীদারি নিশ্চিত করা।

এই সমাবেশে কী ধরনের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী প্রতিক্রিয়া দেয়— সেই বিষয়গুলো পরবর্তীতে জানানো হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *