উদ্ভোধনের ১১ বছরেও চালু হয়নি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ড

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

সামিয়াান হাসান, বিয়ানীবাজার থেকে : বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পঞ্চাশ শয্যায় উন্নীত হওয়ার ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও যন্ত্রপাতি ও লোকবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য সেবা মারাতœকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নার্স, আয়া সহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল না থাকায় উদ্বোধনের ১১ বছর অতিবাহিত হলেও নব নির্মিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ডটি এখনোও পর্যন্ত চালু করা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নতুন এই ওয়ার্ডটি চালু করা হবে বলে দায়ীত্বশীলদের পক্ষ থেকে জানা গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে লোকবল সংকটের সাথে রয়েছে যন্ত্রের অপ্রতুলতা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আলট্রাসোনোগ্রাম যন্ত্র থাকলেও এটা পরিচালনা করার লোক না থাকায় এটা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘ কয়েক বছর থেকে থেকে এক্স-রে যন্ত্রটি বিকল। প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বড় জেনারেটর নষ্ট। মাঝারি জেনারেটর দিয়ে কোনভাবে আলোর ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। যা দিয়ে ইমার্জেন্সি কোন অপারেশন কিংবা অন্য কোন যন্ত্র চালানো সম্ভব নয়। ফলে রোগ নির্ণয়ে একমাত্র ভরসা বাইরের ডায়াগোনিস্টিক সেন্টার। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি সেবা নিতে আসা বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাড়াও গোলাপগঞ্জ উপজেলার একাংশ, বড়লেখা, জকিগঞ্জ এবং কানাইঘাট উপজেলার রোগীদের পড়তে হচ্ছে অর্থের বিড়ম্বনায়।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, পর পর তিনবার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০৫ সালের ৪ আগস্ট এক্স-রে মেশিন স্থাপনের পর এক্সরে একবারও চালু হয়নি। তাছাড়া নাক-কান-গলা, চোখ, চর্ম ও যৌন, মেডিসিন এবং অর্থপেটিক্স বিভাগের কন্সাল্টেন্ট ও দাঁতের ডাক্তারসহ হাসপাতালের ২১ পদের মধ্যে বর্তমানে ১১টি পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে নার্সের ২১টি পোষ্ট থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন ১৬ জন। অথচ বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলেক্সটি পরপর কয়েকবার সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বীকৃতি পেয়েছে প্রসূতি বিভাগের জন্য।

এ বিষয়ে বৃদ্ধ রফিক উদ্দিন বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ভালো কিন্তু বিভিন্ন রকম টেষ্ট করতে হয় বাইরে থেকে। যার ফলে দরিদ্র রোগীরা এত টাকা দিয়ে বাইরে থেকে টেষ্ট করতে পারে না ফলে বাধ্য হয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। তাছাড়া বিদুৎ চলে গেলে ফ্যান বন্ধ থাকে যার ফলে রোগীদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৃদ্ধ শ্বাশুড়িকে নিয়ে এসেছেন সন্তান সম্ভবা আয়শা বেগম। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,-“ডাক্তার পরীক্ষা করে ব্যবস্থা পত্র দেয়ার সাথে আলট্রাসোনোগ্রাম করার জন্য বলেছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এর কোন ব্যবস্থা নেই”।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) মোয়াজ্জেম আলী খান বলেন,-“ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল সংকটের পাশাপশি যন্ত্রের সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে ঠিক, কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা একে বারে অসহায়। আশা করছি করোনা পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হলে এই পরিস্থিতি সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। জনবল সংকট দূর হলে হাসপাতাল থেকে রোগীদের আরোও ভালে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে।”

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *