
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানের সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে অন্তত ৩০ বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার মুরইছড়া এলাকায়। সেখানে সুখীরাম (২৫) নামের এক যুবককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহতের বাড়ি কর্মধার ইউনিয়নের মুরইছড়া বস্তিতে।
ভারত সাতটি দেশের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করলেও সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটে বাংলাদেশ সীমান্তে। ২০১৪ সালে উভয় দেশের মধ্যে সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার না করার বিষয়ে সমঝোতা হলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, নভেম্বর পর্যন্ত তাদের নথিতে বিএসএফের গুলিতে নিহতের সংখ্যা ছিল ২৮। কিন্তু ৩ ও ৪ ডিসেম্বর কুলাউড়া এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে আরও দুজন নিহত হওয়ায় সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০–এ। এ দু’টি ঘটনা আসকের মাসিক প্রতিবেদনে স্থান পায়নি।
গত ১১ বছরে সীমান্তে প্রাণ হারানো বাংলাদেশির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪৫–এ। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালেও প্রতিবছর গড়ে ১৫ জনের মতো নাগরিক নিহত হয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে—২০১৪ সালে ৩২ জন, ২০১৫ সালে ৪৬ জন, ২০১৬ সালে ৩১ জন, ২০১৭ সালে ২ জন, ২০১৮ সালে ১৫ জন, ২০১৯ সালে ৪৩ জন, ২০২০ সালে ৪৯ জন, ২০২১ সালে ১৮ জন, ২০২২ সালে ২৩ জন এবং ২০২৪ সালে এখন পর্যন্ত ৩০ জন সীমান্তে প্রাণ হারিয়েছেন।
আসকের বিশ্লেষণে বলা হয়, সীমান্তে গুলিবর্ষণের ঘটনাগুলোকে ভারত অবৈধ অনুপ্রবেশের অজুহাত হিসেবে ব্যাখ্যা করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য, নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিককে গুলি করে হত্যা করা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ২০১৪ সালের চুক্তির প্রতিশ্রুতিও লঙ্ঘন করে।