ডায়ালসিলেট ডেস্ক:অবৈধ পশুর হাট নিয়ে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও ঠেকাতে পারেনি রাজনৈতিক দলের চিহ্নিত চেরাকারবারী দলের সদস্যদের। এই প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজারে অবৈধ পশুর হাট বসেছে। প্রতি বছর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি থাকে। এরপর প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা অবৈধ পশুর হাট বসায়। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এছাড়া সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানির মাধ্যমে ভারত থেকে গরুর ও মাদকের চালান প্রবেশ করছে। উপজেলার সড়কের বাজারে প্রতিদিন ভোর ৬ টা থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত বসে এই অবৈধ গরুর হাট। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভূমিকা থাকায় চোরাকারবারি সিন্ডিকেট চক্রের দখলে রয়েছে এ বাজারটি। এ বাজার হওয়ায় সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক প্রতিনিয়ত যানঝট লেগেই থাকে। এতে করে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে পাচার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখাযায়, প্রতিদিন ভোর হতে না হতে বাজারে প্রবেশ করে ভারত থেকে চোরাইপথে নিয়ে আসা কয়েক শহ¯্রাধিক গরু। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র ও তিন উপজেলার প্রভাবশালী চেরাকারবারী দলের সদস্যদের ছত্রচ্ছায়ায় নিরাপদে অবৈধভাবে বসানো হয়েছে গরু হাট। রাস্তার দুই পাশ সহ বিভিন্ন বাড়ীর আঙ্গীনায় সেড তৈরী করে বসানো হয়েছে ভারতীয় গরুর হাট। কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে চোরাকাবারি সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা দেদারছে ভারত থেকে গরু নিয়ে আসছে সড়কের বাজারে। সড়কের বাজার থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরে ট্রাক যোগে প্রেরন করা হচ্ছে ভারতীয় এসকল গরু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, কানাইঘাট উপজেলার ৩নং পূর্ব দিঘির পার ইউনিয়নে অবস্থিত বাজারটিতে সরকারি ভাবে কোন গরুর বাজার বসানোর অনুমতি নেই বা গরুর বাজার হিসাবে ইজারা নেই। চলতি বৎসরের শুরু থেকে কিছু সংখ্যাক সিন্ডিকেট চক্রের সহযোগিতায় বাজারটিতে ভারতীয় চোরাকারবারীরা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পথ অবলম্বন করে অবৈধ ভাবে ভারতীয় গরুর হাট গড়ে তুলে। সড়কের বাজারটি গরুর হাট হিসাবে উপজেলা প্রশাসনের কিংবা জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে না থাকায় সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে, এই সুযোগে সুবিধা ভোগীরা অবৈধ বাজার বসিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছে।
সচেতন এলাকাবাসী আরও জানায়, বাজারটি একটি অংশকে গরুর হাট হিসাবে চিহ্নিত করে ইজারার আওতায় নিলে সরকার রাজস্ব বঞ্চিত হতনা। চেরাকারবারীরা সিন্ডিকেট ও প্রভাবশালী চক্র বাজারের বিভিন্ন অংশ সিলেট-জকিগঞ্জ রাস্তার ও বিভিন্ন বাড়ীর আঙ্গীনা দখল করে বাজারের পরিবেশ নষ্ট করছে। দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। অপরদিকে গরু আমদানীর নামে বাংলাদেশ হতে সীমান্ত পথে ভারতে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশী অর্থ (মুদ্রা)। অপরদিকে গরু নিতে বিভিন্ন জেলা আসা ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে ট্রাক দাঁড় করে গরু বোঝাই করতে ভোগান্তীতে পড়তে হচ্ছে সিলেট-জকিগঞ্জ রাস্তার যাত্রী সাধারণ।
এবিষয়ে জানতে ৩নং পূর্ব দিঘিরপার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন কাজল জানান, সড়কের বাজারটি ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা উপজেলা পরিষদের অধিনে নয়। তবে বাজারটি বহু বৎসর হতে ওয়াকফ এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছে। ওয়াকফের মাধ্যমে অপেন টেন্ডারের নিলাম হয়। লিলামে প্রাপ্ত টাকা ওয়ার্কফ ফান্ডে যাচ্ছে। চলতি বৎসর বাজারটি ৬৬ লক্ষ টাকায় নিলাম হয়েছে এর বাহিরে আমার জানা নেই। বাজারটি বৈধ্য না অবৈধ আপনারা খোঁজ নিন। সীমান্ত পার হয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ করছে কিভাবে সেটি সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ভাল জানে।
এবিষয়ে কানাইঘাট থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার জাহিদ জানান, বাজারের বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এবিষয়ে বলতে পারবেন। ভারতীয় গরু বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সীমান্তের দায়িত্ব আমাদের নয়, অনেক সময় কানাইঘাট থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে। বর্তমানে আমার থানায় প্রায় ৩০টি ভারতীয় গরু আটক রয়েছে। পুলিশের জনবল সংকট সে ক্ষেত্রে গরু পাচাঁরে সীমান্ত রক্ষীবাহিনী তাদের টহল জোরদার ভূমিকা রাখলে তাপ্রতিরোধ করা সম্ভব হবে

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *