ডায়ালসিলেট ডেস্ক:সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের ঘোষিত নতুন কমিটি নিয়ে চরম ক্ষুদ্ধ ও হতাশ বিএনপি পরিবার। যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত ত্যাগী, পরিক্ষিতদের নেতাদের নবঘোষিত দু’টি কমিটিতে স্থান পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
‘একতরফা’ কমিটি নিয়ে নাখোশ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা। শুক্রবার রাতে এ ইস্যুতে তারা দফায় দফায় বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।
দলীয় সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করে জানায়, রাতে নগরীর কুমারপাড়া, ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই, মিরবক্সটুলা, আম্বরখানা, মিরাবাজার, দক্ষিণ সুরমায় যুবদলের নতুন কমিটি ইস্যুতে একাধিক বৈঠক হয়েছে।
সূত্র জানায়, ঘোষিত কমিটিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা এম এ হক, তাহসীনা রুশদীর লুনা,কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানসহ বিএনপির বড় বলয়গুলোর ত্যাগী, পরিক্ষিত নেতাদের জায়গা হয়নি নব ঘোষিত কমিটি দু’টিতে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ সিলেট বিএনপির সব বলয়ের নেতারা। শিগগিরই সব বলয়ে নেতারা একত্রিত হয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করার কথা রয়েছে। এক্ষেত্রে শীর্ষ সারির নেতারা কেন্দ্রে নতুন কমিটি দু’টির বাতিলের দাবি জানাবেন। অন্যথায় সিলেট বিএনপি ও অংগসংগঠন থেকে গণপদত্যাগেরও কর্মসূচী আসতে পারে।
বিএনপির একাধিক নেতা এমন তথ্য নিশ্চিত করলেওে এই মুহুর্তে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, অপেক্ষা করুন, শিগগিরই সব কিছু খোলাসা হয়ে যাবে। রাজপথের ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতাকর্মী ছাড়া কোনো অবস্থায়ই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন জোরদার সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
তারা জানান, দীর্ঘ দেড় যুগ পর জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটিতে যাদের স্থান দেওয়া হয়েছে, তারা একজন ব্যবসায়ী নেতার বলয়ের সুবিধাভোগী কর্মী। যাদের বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে দেখা যায়নি।
শুক্রবার বিকেলে যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম নিরব ও সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার কমিটি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কমিটিতে জেলার আহ্বায়ক করা হয়েছে নারী নির্যাতন মামলার আসামি বিতর্কিত কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান পাপলুকে। আর সাবেক ছাত্রনেতা নজিবুর রহমান নজিবকে মহানগর যুবদলের আহবায়ক করা হয়েছে।
ঘোষিত কমিটিতে জেলা শাখায় সদস্য সচিব করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক মকসুদ আহমদকে। আর মহানগর শাখায় সদস্য সচিব করা হয়েছে শাহ নেওয়াজ বক্ত তারেককে।
জেলা শাখার ২৯ সদস্যের আহবায়ক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন এডভোকেট মমিনুল ইসলাম মুমিন, আখতার আহমদ, আশরাফ উদ্দিন ফরহাদ, সাইদ আহমদ, সাহেদ আহমদ চমন, ময়নুল ইসলাম মঞ্জুর, কবির উদ্দিন, সুহেল আরেফিন, মিজানুর রহমান নেছার, লিটন আহমদ, অলি চৌধুরী, কয়েছ আহমদ, অলিউর রহমান, জুনেদ আহমদ, ফখরুল ইসলাম রুমেল, মফিজুস সামাদ চৌধুরী মাহফুজ, গোলাম মোহাম্মদ আব্বাস বাপ্পি, রায়হান আহমদ, আলি আহমদ আলিম, মকসুদুল করিম নুহেল, এনামুল হক চৌধুরী শামিম, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান আফজাল, মাসুক আহমদ, আমিনুল ইসলাম আমিন, আব্দুল মালেক ও এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন হীরা।
মহানগর যুবদলের ২৭ সদস্যের আহবায়ক কমিটির সদস্যরা হলেন,আনোয়ার হোসেন মানিক, তোফাজ্জল হোসেন বেলাল, সাহিবুর রহমান সুজান, রুহুল কুদ্দুছ চৌধুরী হামজা, লুতফুর রহমান, লোকমান আহমদ, সোহেল আহমদ, বেলায়েত হোসেন মোহন, নজরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ সাফি সাহেদ, উমেদুর রহমান উমেদ, এমদাদুল হক স্বপন, এম এ মতিন, কল্লোল জুতি বিশ্বাস জয়, মুজাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, জামিল আহমদ, মির্জা সম্রাট , রেজয়ান আহ্মদ, এহতেসামুল হক সবুজ, ওসমান গনি, জয়নুল ইসলাম জনি, ফহাদ বক্স, নাসির উদ্দিন রহিম, এস এম পলাস ও ইসাক আহমদ।
এদিকে, নগরীতে আনন্দ মিছিল করেছে নবগঠিত সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের আহবায়ক কমিটি। শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর জিন্দাবাজার থেকে মিছিলটি বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোর্টপয়েন্টে গিয়ে পথসভা করে। পথসভায় যুবদলের নতুন কমিটির নেতারা বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন