ডায়ালসিলেট ডেস্ক:সিলেটের জকিগঞ্জে এক যুবককের হাত-পা বেঁধে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করার ঘটনায় কাজলশার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম ওরফে ফকির মাস্তান ভারতে পালানোর সময় গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আব্দুন নাসের আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ভারতে পালানোর পথে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে সালাম মেম্বারকে কানাইঘাটের কাড়াবাল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন ঘটনা শুনে নির্যাতনের শিকার জকিগঞ্জের কাজলসার ইউনিয়নের বড়বন্দ গ্রামের মৃত সফর আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫)কে মামলা অনুরোধ করেন। আজ বৃহস্পতিবার গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৪ তারিখ-২১/১০/২০১৯।এর আগে সালামের অপর ৩ সহযোগীকে আটক করেছে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ। তারা হল এবাদ মেম্বার, আনোয়ার, ও শাহজাহান।উপজেলার ৩নং কাজলশার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম ওরফে ফকির মাস্তান একই ইউনিয়নের বড়বন্দ গ্রামের মৃত সফর আলীর ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫)কে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মমভাবে পায়ের নিচে বেধড়ক মারপিট করে নির্যাতন করছেন। নির্যাতনের শিকার যুবক চিৎকার, চেচামেচি ও বাঁচার আকুতি করতেও দেখা যায়। এরপরও আব্দুস সালামের নির্যাতন থেমে থাকেনি।

এ ছাড়া গত ১২ নভেম্বর ফকির মস্তানের বিরুদ্ধে সিলেটের পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগ করেন আটগ্রামের আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আব্দুস সালামের নির্যাতনে নিহত আব্দুল মান্নান বুতুলের চাচাতো ভাই শাকিল আহমদ।

অভিযোগে তিনি বলেন, ১০ অক্টোবর দুপুরে নিহতের স্ত্রী লায়লী বেগম ও চারিগ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সালাম মেম্বার ওরফে ফকির মাস্তান কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আব্দুল মান্নানকে নির্মমভাবে প্রহার করেন। তাদের প্রহারে ঔই দিন রাতে মান্নান মারা গেলে তার মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন। পরের দিন এশার নামাজচলাকালীন সময়ে কোনো মাইকিং না করে চুপিসারে ৪/৫জন লোক নিয়ে নিহতের দাফন করে দেন আব্দুস সালাম উরফে ফকির মাস্তান।লিখিত অভিযোগে সালাম মেম্বারের নানা অপকর্মের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরে বলেন, সালাম মেম্বার আশ্রয়ন প্রকল্পটি তার কব্জায় রেখে নারী ও মাদকের আখড়ায় পরিণত করেছিলেন। ইতিপূর্বে অভিযোগকারীকে মারধোর করে বসত ঘরে আগুন দিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে মেরে ফেলা হয়েছে। তার নিহত ভাই আব্দুল মান্নানের স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল সালাম মেম্বারের। অনৈতিক সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় তাকে জীবন দিতে হয়েছে।জানা গেছে, সে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। জকিগঞ্জ থানার ওসি মীর মো. আব্দুন নাসের বলেন, প্রায় তিন মাস আগে আব্দুস সালাম এ ঘটনাটি করে। আশ্রয়ন প্রকল্পের আব্দুল মান্নান বুতুলকে হত্যার প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিলো নিহত মান্নান বিষপান করেছে। অসুস্থ অবস্থায় প্রথমে তাকে জকিগঞ্জ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে সিলেটে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার মুত্যুর পর আমাদেরকে জানানো হয় সে মৃত্যু বরন করেছে। আমি তাদেরকে বলেছি ময়নাতদন্ত করে লাশ দাফন করতে হবে। পরে সিলেট কোতোয়ালী থানা পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে। এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ থানায় ঘটনার তিনদিন পর একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *