স্পোটর্স ডেস্ক:‘মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি’- পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এহসান মানি এমনটা ভাবতেই পারেন। যেখানে টাইগারদের পাকিস্তান সফরে যাওয়াই ছিল অনিশ্চতায়। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছাড়া খেলার কথাও ছিল না। সেখানে টেস্ট সিরিজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এফটিপির বাইরে থাকা একটি ওয়ানডেও। মঙ্গলবার দুবাইয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) দুই প্রধান মিলে এমন সিদ্ধান্তে এসেছেন। নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর। অবশ্য এই সফর একবারে হচ্ছে না। তিন মাসের মধ্যে তিন দফায় টাইগারদের গোটা সিরিজ শেষ করার কথা। এমন সিদ্ধান্তের পর শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। যেখানে সফরই হয় না সেখানে তিনবারে সিরিজ খেলতে যাওয়া নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে এমন সমালোচনায় বিরক্ত বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গতকাল সকালে দুবাই থেকে ফিরে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না এটা কেন বলা হচ্ছে। ওরা (পিসিবি) কখনই বলেনি আমরা টি-টোয়েন্টি খেলে আসবো। তারা প্রথমে বলেছে পুরো সিরিজ খেলতে হবে। পরে বলেছে, আগে টেস্ট খেলতে হবে। এখন এটা তারা (সমালোচকেরা) কেন বলছে এটার কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছি না। আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে। আমরা যেটা বলেছি আমার মনে হয় সেটাই হয়েছে। আমি সংবাদমাধ্যমে বলেছি, আমরা প্রথমে যাবো টি-টোয়েন্টি খেলতে, পরে খেলবো টেস্ট, তাইতো হয়েছে।’ দুবাইয়ে আইসিসি প্রেসিডেন্ট শশাঙ্ক মনোহরের মধ্যস্থতায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সফর নিয়ে জটিলতা কেটে গেছে বলেই জানা গেছে। কেন তিনবারে এই সফর তার ব্যাখ্যায় নাজমুল হাসান বলেন, ‘আইসিসি প্রেসিডেন্ড শশাঙ্ক মনোহরের সঙ্গে আমার আগেই কথা হয়েছিল এই সময়টায় উনি থাকবেন, আমি সময় পেলে যেন দেখা করি। গিয়ে দেখলাম পাকিস্তানও আছে ওইখানটায়। আমাদের আগেই তারা গিয়েছে। উনাদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আমার সঙ্গে যখন প্রথম কথা হলো বললো যে আড়াইটার সময় আমাদের সঙ্গে বসবে। একটা টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি খেলে আসা যায় কি না। আমরা বলেছি শুধু টি-টোয়েন্টি খেলে চলে আসতে চাই। তারপর একটা সময় যাবো। পাকিস্তানের বেশ লস হচ্ছে। পাকিস্তানের মাটিতে খেলার আগে আমাদের একটা প্র্যাক্টিস ম্যাচ দরকার। ওরা বলেছিল টি-টোয়েন্টি করা যায় কি না। টিেেটায়েন্টি হলে তাদের লসটা কিছুটা পোষাবে। তিনবারে একটা সিরিজ হোস্ট করা তাদের জন্য অনেক খরচ বেড়ে গেছে। এতো সময়ও নেই তারা নতুন করে মার্কেট করতে পারবে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে টি-টোয়েন্টির চেয়ে একটা ওয়ানডে ম্যাচ হলে অনুশীলনটা একটু ভালো হবে।’ বর্তমান সূচি অনুসারে বাংলাদেশ দল প্রথম দফা পাকিস্তানে যাবে জানুয়ারিতে, তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে। ফেব্রুয়ারিতে থাকছে হবে টেস্ট। এপ্রিলে আবার একটি ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচ। বাংলাদেশ খেলবে লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি ও করাচিতে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের পাকিস্তান সফরে সবুজ সংকেতের পাশাপাশি শর্ত ছিল স্বল্প সময়ে খেলে আসা। কিন্তু এখন সেখানে তিনবারে প্রায় তিন মাসের সফর হয়ে গেছে। তবে সরকারের নিদের্শ অমান্য হয়নি বলেই জানিয়েছেন নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘সরকার থেকে বলা আছে আগের থেকে আমরা যেটা বলে আসছি সেটাই লেখা আছে। তারা বলেছে শর্ট টাইম। অবস্থা বিবেচনা করে পরবর্তীতে টেস্টগুলো খেলবে। আমরা এখন পর্যন্ত সেই ধারাতেই আছি।’ বাংলাদেশ দল ২৪ থেকে ২৭শে জানুয়ারি পর্যন্ত খেলবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ফিরে এসে দেশে টেস্ট খেলার জন্য প্রস্তুতি নেবে। সব ঠিক থাকলে প্রথম টেস্ট খেলবে ৭ থেকে ১১ই ফেব্রুয়ারি। এরপর আবারো দেশে ফিরে আসবে টাইগাররা। শেষ টেস্টের আগে প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ দল খেলবে একটি ওয়ানডে। সেটি আগামী ৩রা এপ্রিল মাঠে গড়াবে। আর সিরিজ ও সফর দুটিই শেষ হবে ৫ থেকে ৯ এপ্রিল দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ দিয়ে। পাকিস্তানের জন্য বর্তমান এই সূচি মেঘ না চাইতে বৃষ্টির মতোই। তবে সব কিছু ঠিক থাকলেই একের পর এক সিরিজ খেলতে পাকিস্তান সফরে যাবে টাইগাররা। যদি এর মধ্যে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় না নেয়! তবে এমন সিদ্ধান্তকে ক্রিকেট কুটনীতিতে হারও মানতে নারাজ বিসিবি প্রধান। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট কূটনীতিতে হার! এটা কেন বলছে কোনো কারণই আমি খুঁজে পাচ্ছি না। আমি জানি না। আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে। আমরা প্রথম থেকে যেটা বলেছি সেটাই হয়েছে। আমার কাছে তেমনই মনে হচ্ছে।’ তার এমন দাবির কারণও আছে। শোনা যাচ্ছে, আাসন্ন এশিয়া কাপের আয়োজনটাই বিনিময় হয়েছে পাকিস্তানের সঙ্গে। যা দুবাইয়ে করার কথা পিসিবির। তবে সেই ভেন্যু বদলে তা বাংলাদেশে হতে পারে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *