ডায়ালসিলেট ডেস্ক:সিলেট নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদের বিরুদ্ধে ছিনতাই কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জকিগঞ্জের নজরুল ইসলাম নামের এক যুবক।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যারাতে দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর এলাকায় দুর্দর্ষ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন জকিগঞ্জের গুলশান মরিয়ম নামের এক মহিলা। এসময় তার কাছ থেকে স্বর্ণালঙ্কার, স্মার্টফোন ও নগদ টাকাসহ ৪ লাখেরও বেশি টাকার মালামাল ছিনিয়ে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

এ ঘটনায় এসএমপি’র মোগলাবাজার থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেছেন জকিগঞ্জের গেচুয়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালিক ও গুলশান মরিয়মের ছেলে নজরুল ইসলাম। মামলা নং- ৯। মামলায় জুয়েল ছাড়াও আসামি রয়েছেন আরও দুইজন।

এজাহারে উল্লেখ, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নজরুল ইসলাম তার মা গুলশান মরিয়ম, বোন ও ভাগ্নেকে নিয়ে সিলেট শহর থেকে বিয়ানীবাজার যাওয়ার উদ্দেশে সিএনজি অটোরিকশাযোগে রওয়ানা দেন। অটোরিকশাটি সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের গোটাটিকর এলাকার সুন্দরবন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে আসামাত্র পেছন থেকে একটি মোটরসাইকেলযোগে আসা দুইজন ছিনতাইকারী গুলশান বেগমের হাতব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়।

ব্যাগের ভেতর স্বর্ণালঙ্কার, স্মার্টফোন নগদ টাকাসহ ৪ লাখ ২২ হাজার টাকার মালামাল ছিলো। ছিনতাইকারীরা ব্যাগ নিয়ে কিছুদূর যেতেই তাদের মোটরসাইকেলের পেট্রল শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা গোটাটিকর এলাকার হবিনন্দি সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পার্শ্ববর্তী টং দোকানের সামনে মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়।

এদিকে, নজরুল ইসলাম তাদের অটোরিকশা নিয়ে পেছন থেকে ধাওয়া করে এসে মোটরসাইকেলটি ওই জায়গায় রাখা দেখে থামেন। এসময় হঠাৎ এসে সিলেট নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদ মোটরসাইকেলটি তার বলে দাবি করেন। তখন নজরুল ছিনতাইকারী হিসেবে জুয়েলকে চিনে ফেলেন এবং ঝাপটে ধরে ‘ছিনতাইকারী’ বলে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা এসে জড়ো হন। এলাকাবাসী জুয়েলকে চিনতে পেরে তাকে ছেড়ে দিতে নজরুলের প্রতি অনুরোধ জানান। তবে পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত নজরুল কিছুতেই জুয়েলকে ছাড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এসময় ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নজরুল, তার মা, বোন ও ভাগ্নেকে হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশ চলে আসলে মোটরসাইকেল নিয়ে জুয়েলসহ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা সটকে পড়েন। পরদিন বুধবার নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে মোগলাবাজার থানায় ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় দক্ষিণ সুরমার গঙ্গানগর হবিনন্দি এলাকার মৃত শামসু মিয়ার ছেলে ও সিলেট নগরীর ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদকে। এছাড়াও একই এলাকার মৃত আব্দুল মতিনের ছেলে রানা ও রিয়াজ মিয়ার ছেলে জাওয়াদকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আখতার হোসেন সিলেটভিউ২৪ডটকমকে জানান, আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল আহমদকে ১ নং এবং রানাকে ২ ও রিয়াজকে ৩ নং আসামি করে একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেছেন জকিগঞ্জের নজরুল ইসলাম। এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েলের বিরুদ্ধে এরকম আগে কোনো অভিযোগ ছিলো কি না- এমন একটি প্রশ্নের জবাবে ওসি আখতার বলেন, এ ক্ষেত্রে আমার কোনো ব্যক্তিগত বক্তব্য নেই। পুলিশ এই বিষয়টা নিয়ে তদন্ত করছে, তদন্তে জুয়েল ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত হলে আটক করা হবে।

এদিকে, দক্ষিণ সুরমার গঙ্গানগর হবিনন্দি এলাকার লোকজনের সঙ্গে ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-অনৈতিকতার অভিযোগ রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানান।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *