খুলনার রাইসা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব খান (৫৯) হত্যা মামলায় প্রধান আসামিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা হচ্ছে- প্রধান আসামি জমির, এজাহারভুক্ত আবুল আলী ও মো রহিম এবং সন্দেহভাজন খাদিজা ও গোলাম মোস্তফা। বুধবার (১৭ জুন) দিবাগত রাতে এদের গাজীপুরের টঙ্গী ও খুলনার রূপসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এরআগে, মঙ্গলবার রাতে রহিমকে আটক করা হয়। এনিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামির মধ্যে তিন জন গ্রেফতার হলো। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির এ ৎসব তথ্য জানান।

বুধবার দুপুরে নিহতের ছোট ভাই খুলনা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনায় চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। জানা যায়, গ্রেফতার জমির মৃত রোগী শিউলী বেগমের ভাই। আর আবুল আলী শিউলির স্বামী, খাদিজা শিউলির ভাবী ও গোলাম মোস্তফা শিউলির চাচা।

উল্লেখ্য, নগরীর মোহাম্মদনগরের পল্লবী সড়কের বাসিন্দা আবুল আলীর স্ত্রী শিউলী বেগমকে ১৪ জুন সিজারের জন্য রাইসা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেদিন বিকাল ৫টায় তার অপারেশন হয়। বাচ্চা ও মা প্রথমে সুস্থ ছিলেন। পরে রোগীর রক্তক্ষরণ হলে ১৫ জুন সকালে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানেও রোগী রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। নেওয়ার পথে ১৫ জুন রাতে শিউলী বেগম মারা যান।

এই ঘটনায় নিহতর স্বজনরা ১৫ জুন রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ক্লিনিকে গিয়ে ডা. রকিবকে লাথি-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে তার মাথার পেছনে জখম হয়। তাকে প্রথমে গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে ১৬ জুন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে, ডা. আব্দুর রকিব খানের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার দাবিতে খুলনায় মহামারি করোনা ভাইরাসের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের ডাক্তারা কর্মবিরতি পালন করছে।

বুধবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ কর্মবিরতির কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) খুলনার ডাকে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তবে এর আওতার বাইরে রয়েছে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও করোনা হাসপাতাল।

বিএমএ-র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের কর্মবিরতি থাকবে। তবে জরুরি ও কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট সব চিকিৎসা বহাল থাকবে। ঘটনা পরবর্তীতে মামলা নিতে গড়িমসি করায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করতে হবে। সব হাসপাতালে কালো পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে ও চিকিৎসকরা কালো ব্যাজ ধারণ করছেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *