বিনোদন ডেস্কঃঃ
“হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলেই ঠুস” এ কালজয়ী গানের সুরকার কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ যিনি এক কথায় সংগীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। আজ ৪নভেম্বর, বুধবার এই দেশবরেণ্য শিল্পীর জন্মদিন। তিনি বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, যে’জন্য তিনি ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। সিনেমার গানে তার কণ্ঠ আজো মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। বহু কালজয়ী গান তিনি রেখে গেছেন তার শ্রোতা-ভক্তদের জন্য।
নন-হজকিন লিম্ফোমা নামক ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন তিনি সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেছিলেন। গত ৬ জুলাই,২০২০ ৬৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান কিংবদন্তি এই শিল্পী। ১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সেখানেই কেটেছে তাঁর দুরন্ত শৈশব ও কৈশোর।
মৃত্যুর পর এন্ড্রু কিশোরের এটাই প্রথম জন্মদিন। প্রয়াত এই সংগীতশিল্পীর জন্মদিন উপলক্ষে পরিবারের কোনো আয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু। তিনি বলেন, ‘এন্ড্রু কিশোরের জন্য সবাই দোয়া করবেন। এটাই তার জন্য, তার বিদেহী আত্মার জন্য কাজে লাগবে।’
এদিকে জানা গেছে এন্ড্রু কিশোরের জন্মদিন উপলক্ষে শিল্পীর জন্মস্থান রাজশাহীতে ওস্তাদ আবদুল আজিজ স্মৃতি সংসদ নামে একটি সংগঠন দিনব্যাপী ‘কন্ঠরাজ এন্ড্রু কিশোর জন্মোৎসব’ শিরোনামে একটি উৎসবের আয়োজন করেছে। রাজশাহীর স্থানীয় এক রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিতব্য এ আয়োজনে রয়েছে জন্মোৎসবের কেক কাটা, তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ ও তাঁর গাওয়া গান নিয়ে সংগীতানুষ্ঠান। আয়োজনে সংগঠনের সদস্যসহ এন্ড্রু কিশোর ভক্তরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে গান শিখেছিলেন এন্ড্রু কিশোর। জীবদ্দশায় রাজশাহী নিজের বাড়িতে বেড়াতে গেলে শহরের বেলদারপাড়া অবস্থিত ওস্তাদের নামে গড়া এই সংগঠনে ও সুরবানী গানের স্কুলে কিছুটা সময় কাটাতেন অ্যান্ড্রু কিশোর। কিশোর সিনেমার প্লেব্যাক শুরু করেন ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ ছবিতে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ নামের গান দিয়ে। প্রায় চার দশক সিনেমার গান গেয়েছেন তিনি। তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে “জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প”, “হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস”, “ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে”, “আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি”, “আমার বুকের মধ্যে খানে”, “আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন”, “ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা”, “সবাই তো ভালোবাসা চায়” প্রভৃতি।
স্বীকৃতিস্বরুপ পেয়েছেন আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পাঁচবার বাচশাস পুরস্কার এবং দুইবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার।