ভাসানচর এবং কক্সবাজারে থাকা রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরজমিনে দেখতে ঢাকা সফরে আসা জাতিসংঘের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনার ফর প্রটেকশন গিলিয়ান ট্রিগস ও অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনার ফর অপারেশনস রাউফ মাজুও প্রায় অভিন্ন সুরে  বলেছেন, বাংলাদেশসহ সব জায়গা শরণার্থীদের পাশে থাকবে ইউএনএইচসিআর। তাদের ভাষ্যটি ছিল ‘ রোহিঙ্গাদের পাশে আমরা অতীতেও ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকবো।’ এ সময় তারা করোনা থেকে রক্ষায় রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার যা করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ভাসানচরের পরিবেশ বিষয়েও তারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জায়গা কক্সবাজারের চেয়ে ভালো। এখানে অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা করা হবে। রোহিঙ্গাদের সহায়তায়, পুনর্বাসনে ভাসানচরে যুক্ত হবে জাতিসংঘ। বুধবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বিদায়ী বৈঠক শেষে তারা এসব কথা বলেন। এ সময় যৌথ সংবাদ  ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, পালিয়ে আসার চার বছরেও দেশে ফিরতে না পেরে হতাশ রোহিঙ্গারা। যে কারণে তারা ভাসানচরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে।  রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর পররাষ্ট্র মন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গারা কী করবে, তারা তাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না। তাদের বাচ্চাদের পড়ালেখা নাই। তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। ফলে তারা নিজ দেশে না হয় তৃতীয় কোন দেশে যেখানে উন্নত জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে তারা ফিরতে চায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের রাখাইনে বেশি ফোকাস করতে বলেছি। সেখানে প্রত্যাবাসনই প্রকৃত সমাধান। এসময় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। 

Bysohel ahmed

জুন ২, ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়্যিপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি তুরস্ককে একপেশে করে ফেলে তাহলে তারা এক মূল্যবান বন্ধুকে হারাবে। আগামী ১৪ই জুন ব্রাসেলসে ন্যাটো সামিটের এক ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে এরদোগানের। তার আগেই বাইডেনকে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দিলেন। একই সঙ্গে আর্মেনিয়ায় গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেয়ায় বাইডেনের সমালোচনা করেছেন।  যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে মিত্রতা ছিল এরদোগানের। কিন্তু জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার হাতবদল হয়। প্রেসিডেন্ট হয়ে আসেন জো বাইডেন। তিনি আগে থেকেই তুরস্ক, সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছিলেন।

ফলে স্বাভাবিকভাবেই তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর প্রেক্ষিতে আঙ্কারা-ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্ন করলে এরদোগান বলেন, যে তুরস্ককে একপেশে করে দেবে, সে মূল্যবান একটা বন্ধু হারাবে।
উল্লেখ্য, গত ২০ শে জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতা গ্রহণ করেন জো বাইডেন। কিন্তু তার পর পরই তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সাথে যোগাযোগ করেননি বরং অপেক্ষা করেছেন তিন মাস। এরপর গত এপ্রিলে এরদোগানকে ফোন করেন বাইডেন। তাদের মধ্যে এই ফোনকল এমন এক সময়ে ঘটে যখন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোম্যান সাম্রাজ্যের চালানো আর্মেনিয়া গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেয়ার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন বাইডেন। তার এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ তুরস্ক। এ বিষয়ে মঙ্গলবার এরদোগান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের উত্তেজনার কারণ কি? সেটা হলো তথাকথিত আর্মেনিয়া গণহত্যা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, আর্মেনিয়াকে উপদেশ, পরামর্শ দেয়া ছাড়া আপনাদের সামনে কি আর কোনো সমস্যা নেই? ২০১৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্কে উত্তেজনাকর আরো কয়েকটা ঘটনা তিনি উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সিরিয়া সংকটে কুর্দি যোদ্ধাদের সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ এই কুর্দিদেরকে তুরস্ক সন্ত্রাসীগোষ্ঠী বলে বিবেচনা করে। এরদোগান বলেন, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের মিত্র হয়,তাহলে তাদের কাকে সমর্থন করা উচিত আমাদের না সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর? দুর্ভাগ্যবশত তারা এখনও সন্ত্রাসীগোষ্ঠীকে সমর্থন করে আসছে। এরদোগান-বাইডেন সম্পর্ক নতুন করে সাজানোর ইচ্ছা আছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন এরদোগান। গত সপ্তাহে তিনি বলেন, তাদের সাক্ষাৎ যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্কের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন যুগের অগ্রদূত হয়ে আসবে। ২০০৩ সাল থেকে তুরস্কের ক্ষমতায় থাকা এরদোগান বলেন, হোয়াইট হাউজে রিপাবলিক বা ডেমোক্রেট যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন তাদের সাথে সবসময়ই ভারসাম্যপূর্ণভাবে কাজ করেছি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *