নিজস্ব প্রতিবেদক :: মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না, এটাই বিধিনিষেধের প্রধান শর্ত। তবে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৪ জুলাই) সকাল থেকেই নগরীর অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক সব জায়গায় জনসমাগম দেখা গেছে।
এদিন নগরীর সোবহানীঘাট, বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদিনা মার্কেট এবং দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। সবচেয়ে বেশি মানুষের জটলা ছিল কাঁচাবাজারগুলোতে।
কথা বলে জানা গেছে, অনেকেই বিনা কারণে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। অনেকে মাস্ক পরছেন না, কেউবা ঝুলিয়ে রাখছেন থুতনিতে। প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহন না চললেও রিকশা, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত পরিবহন সবই চলছে।
নগরীর রোজভিউ পয়েন্টের সামনে কথা হয় মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়া ফখরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাজারে মাছ কিনতে এসেছিলাম। ভালো মাছ পাইনি তাই বাসায় চলে যাচ্ছি।’
মোটরসাইকেলে পরিবার নিয়ে বের হওয়া জায়েদ হোসেনের সঙ্গে কথা হয় বন্দরবাজারে। তিনি বলেন, ‘শ্বশুর অসুস্থ। তাই পরিবার নিয়ে শ্বশুরকে দেখতে ওসমানী মেডিকেলে যাচ্ছি।’
জিন্দাবাজার সোনালী ব্যাংকের নিচে কথা হয় আবিদ মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কেমন লকডাউন চলছে তা দেখতে এসেছি। এখানে এসে তো দেখছি বাস ছাড়া সবাই চলছে। মানুষও ঘর থেকে বের হচ্ছে। তাহলে লকডাউন দিয়ে লাভ কী?’
নগরীর কালিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। বাজারটি থেকে কেউ ভিড় করে সবজি কিনছেন। কেউ বিনা কারণে ঘোরাঘুরি করছেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি।
মাস্ক ছাড়া বাজারটিতে আসা রুহান নামের একজন বলেন, ‘আমার কোনো ঠাণ্ডা-জ্বর নেই। আমি করোনাভাইরাসকেই ভয় পাই না। আল্লাহ যা করেন তাই হবে।’
এখানে কেন এসেছেন? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কাজ নেই। যে অফিসে কাজ করি তা বন্ধ। ঘরে বসে থাকতে ভালো লাগে না। তাই একটু হাওয়া-বাতাস খেতে বাইরে এসেছি।’
বাজারে ভিড় ঠেলে সবজি কিনে বাইরে আসা শিল্পি বেগমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ঘরে কোনো সবজি নেই তাই সবজি কিনতে এসেছি। এখানে তো সব দোকানেই ভিড়। সবাই আসছে। আমি এলে সমস্যা কী?’
আম্বরখানা পয়েন্টে কথা হয় রিকশাচালক জসিম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গতকালের চেয়ে আজ রাস্তায় মানুষ বেশি। তবে আমাদের ভাড়া সেভাবে হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে দুই-একটা ভাড়া পাচ্ছি। বেশিরভাগ মানুষ রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছে।’
ডায়ালসিলেট/এম/এ/