স্পোর্টস ডেস্ক;:বার্সেলোনার সঙ্গে দীর্ঘ সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) যোগ দিয়েছেন লিওনেল মেসি। তবে ন্যু-ক্যাম্পের মেসিকে দেখা যাচ্ছিলো না লা প্যারিসিয়ানদের জার্সিতে। তিনটি ম্যাচ খেললেও পাননি গোলের দেখা। সর্বশেষ ফরাসি লিগ ওয়ানের ম্যাচে অলিম্পিক লিওঁর বিপক্ষে গোলবারের উদ্দেশ্যে ৬টি শট নিয়েও কাক্সিক্ষত গোল পাননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। মেসির একটি ফ্রি-কিক শট গোলপোস্টে লেগে ফেরত আসে। এরপর চোটাগ্রস্ত মেসির অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয় দুই ম্যাচ। অবশেষে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চেনারূপে ধরা দিলেন মেসি। ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতো গোলে আন্দোলিত করলেন পার্কে দেস প্রিন্সেস স্টেডিয়াম।

পিএসজির নাম্বার থার্টি’র সঙ্গে দর্শকরাও মেতে উঠে উদ্যাপনে।

প্রথম গোলের স্বাদ পেয়ে মেসি যে কতোটা আনন্দিত তা প্রকাশ পেলো তার কথায়ই। তিনি বলেন, ‘আমি খুবই খুশি যে গোল করতে পেরেছি।’
নেইমার, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, মাউরো ইকার্দি- এই তিনজন ছাড়া পিএসজির সকলেই মেসির নয়া সতীর্থ। চিরচেনা ন্যু-ক্যাম্প ছেড়ে নতুন পরিবেশে এসে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লেগেছে মেসির। তিনি বলেন, ‘আমি পিএসজিতে আসার পর খুব বেশি ম্যাচ খেলিনি। পার্কে দেস প্রিন্সেসে এটা আমার দ্বিতীয় ম্যাচ। আমি ধীরে ধীরে আমার নতুন পরিবেশ, নতুন ক্লাব আর নতুন সতীর্থদের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছি।’

পিএসজির আক্রমণভাগে নেইমার-মেসি-এমবাপ্পেকে নিয়ে আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা ভক্ত-সমর্থকদের। এদিন নেইমার-এমবাপ্পে গোল না পেলেও দুই সতীর্থের সঙ্গে মেসির রসায়নটা বেশ জমে ওঠেছিল। এমনকি মেসির গোলে অবদান ছিল এমবাপ্পেরই। ফ্র্যাঞ্চম্যানের ব্যাক ফ্লিকেই প্রথম গোলের দেখা পান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণে প্রত্যয়ী মেসি বলেন, ‘আমরা যত বেশি একসঙ্গে খেলব, তত বেশি দলের কাজে আসতে পারব। সবাইকে একসঙ্গে উন্নতি করতে হবে। মান বাড়াতে হবে একই সঙ্গে। আমরা আজ ভালো খেলেছি। সামনের ম্যাচগুলোতেও আমাদের নিজেদের সেরাটা দিয়ে যেতে হবে।’

ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মেসির প্রথম গোল হওয়া একটি কারণে বিশেষ। প্রিয় গুরু পেপ গার্দিওলা যে সিটিজেনদের দায়িত্ব পালন করছেন বেশ ক’বছর ধরে।

পেপ গার্দিওলা বার্সেলোনায় পাঁচ বছরের কোচিং ক্যারিয়ারে জেতেন ১৪টি শিরোপা। এই স্প্যানিশ কোচের প্রধান অস্ত্র ছিলেন মেসি। ডাগআউট বসে ছক কষতেন গার্দিওলা। আর মাঠে সেটির বাস্তবায়ন করতে মেসির থাকতো বড় ভূমিকা। ৯ বছর আগে ন্যু-ক্যাম্প ছাড়েন গার্দিওলা। বায়ার্ন মিউনিখ ঘুরে এখন ম্যানচেস্টার সিটির ডাগআউটে থিতু হয়েছেন তিনি। গার্দিওলা বার্সার কোচের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর মেসি কখনোই তার কোনো দলের বিপক্ষে গোল পাননি। কাল সেটিই করলেন। গার্দিওলা অবশ্য শুভেচ্ছাই জানিয়েছেন মেসিকে, ‘মেসির প্রতি আমার সব সময়ই শুভকামনা আছে। আমি চাই মেসি পিএসজিতে আনন্দে থাকুক এবং এখানকার প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করুক। আজ মেসির সঙ্গে দেখা হয়ে খুব ভালো লাগল।’
ম্যাচ হারলেও পার্কে দেস প্রিন্সেসে ছিল সিটির আধিপত্য। বল দখল কিংবা আক্রমণÑ সবদিকেই এগিয়ে ছিল স্কাই ব্লুরা। দলের খেলায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে গার্দিওলা বলেন, ‘আমার মনে হয়, আমরা সত্যিই ভালো একটি ম্যাচ খেলেছি। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ম্যাচটির মতোই ছিল পারফরম্যান্স (শনিবার প্রিমিয়ার লীগে চেলসির বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের ম্যাচ)। তবে আমাদের যে মানের ফুটবলার আছে, শুরুতে হয়তো সেই তুলনায় কিছুটা কম আগ্রাসী ছিলাম আমরা।’

গার্দিওলা বলেন, ‘ গোলের সুযোগ আমরা যথেষ্ট তৈরি করেছি। তবে আমরা মরিয়া আক্রমণ করলেও নিয়ন্ত্রণ কম ছিল। আর ওদের (পিএসজি) মান তো দুর্দান্তই।’

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *