আন্তর্জাতিক ডেস্ক;:রেল কার থেকে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়া সফলভাবে একটি হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার পর এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটির খবর সামনে আসে। নতুন বছর পড়তে না পড়তেই এনিয়ে তৃতীয়বার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করলো কিম জং উনের দেশ। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শুক্রবারের পরীক্ষামূলক মহড়াটি “উত্তর ফিয়ংগান প্রদেশের রেলওয়ে-বাহিত ক্ষেপণাস্ত্র রেজিমেন্টের দক্ষতা যাচাই ও বিচার করার জন্য” ব্যবহার করা হয়েছিল। উত্তর কোরিয়ায় রেল গাড়ি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। গত সেপ্টেম্বরে একই ধরনের পরীক্ষা চালায় তারা। কেসিএনএ অনুসারে, কোরিয়ান পিপলস আর্মির কমান্ডিং অফিসার এবং একাডেমি অফ ডিফেন্স সায়েন্সের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা মিসাইলের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। কেসিএনএ জানিয়েছে, কোরিয়ার পূর্ব সাগরে এই পরীক্ষা চালানো হয়েছে এবং ব্যালিস্টিক মিসাইলগুলি সঠিকভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ (জেসিএস) জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া উত্তর পিয়ংগান প্রদেশের উইজু এলাকা থেকে কোরীয় উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলের জলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেসিএস এক বিবৃতিতে বলেছে, সামরিক বাহিনী সন্দেহ করছে যে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলির উড়ানের দূরত্ব প্রায় ৪৩০ কিলোমিটার এবং উচ্চতা প্রায় ৩৬ কিলোমিটার ছিল। বিষয়টি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষ আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণ করছে। মঙ্গলবার পিয়ংইয়ং থেকে হাইপারসনিক মিসাইল ছুঁড়েছিল উত্তর কোরিয়া। এরপরই বুধবার আমেরিকা নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে তাদের উপরে। এবার সেই নিষেধাজ্ঞার বদলা নিতেই শুক্রবার ফের একবার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে পরীক্ষা চালালো তারা। শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র বিকাশের বিরুদ্ধে অবস্থানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে উপদেশ দিয়েছেন, যোগ করেছেন “যুক্তরাষ্ট্র যদি এমন একটি সংঘর্ষমূলক অবস্থান গ্রহণ করে তাহলে DPRK-এর বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী এবং নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া নিতে বাধ্য হবে।” KCNA এর একটি বিবৃতিতে, মুখপাত্র দেশটির অস্ত্রসম্ভারকে শক্তিশালী করার কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন উত্তর কোরিয়ার নতুন ধরনের অস্ত্রের সাম্প্রতিক বিকাশ তার জাতীয় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আধুনিকীকরণের প্রচেষ্টার অংশ মাত্র। লিফ-এরিক ইজলি, সিউলের ইওয়া ওমেনস ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক, শুক্রবারের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা প্রসঙ্গে বলেন, উত্তর কোরিয়া এভাবেই একটা ফাঁদ পাতছে বাইডেন প্রশাসনের জন্য। পরপর ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে পরীক্ষা করে তাদের চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে। আন্তর্জাতিক আইনে পিয়ংইয়ংকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করতে বাধা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা সেটি লঙ্ঘন করে অস্ত্রের বিকাশ অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ওয়াশিংটন থেকে উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে কোনো সমঝোতার লক্ষণ দেখাননি। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুং ইউই-ইয়ং-এর সাথে একটি ফোন কল করার পর, ব্লিঙ্কেন উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষার নিন্দা করেছেন , সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি নিজেদের সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। সূত্র : সিএনএন

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *