স্পোর্টস ডেস্ক :: শুরুতে ঝড় তুলবেন মুনিম শাহরিয়ার, পরে বাকিটা এগিয়ে নেবেন সাকিব আল হাসান- এখন যেন এই ধারায় ঢুকে গেছে ফরচুন বরিশাল। টানা তিন ম্যাচে এ দুই ব্যাটারের নৈপুণ্যে সহজ জয়ের দেখা পেলো দলটি। একইসঙ্গে উঠে গেলো টেবিলের শীর্ষে।
জিতলেই নিশ্চিত প্লে-অফের টিকিট, কিন্তু হেরে গেলেই জেঁকে বসবে বাদ পড়ার শঙ্কা- এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে বরিশালের সামনে পাত্তাই পায়নি মিনিস্টার ঢাকা। সাকিবের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তারা ম্যাচটি হেরে গেছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে।
নিজেদের ১০ ম্যাচ শেষে ৭ জয় ও এক পরিত্যক্ত ম্যাচের সুবাদে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের এক নম্বরে উঠে গেছে বরিশাল। এ নিয়ে টানা ছয় ম্যাচ জিতলো তারা। অন্যদিকে ১০ ম্যাচে ৪ জয় ও এক পরিত্যক্ত ম্যাচের কল্যাণে ৯ পয়েন্ট রয়েছে ঢাকার ঝুলিতে।
পয়েন্ট টেবিলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের অবস্থান তিন নম্বরে। কিন্তু তাদের স্বস্তির জায়গা নেই। কারণ ৯ ম্যাচ করে খেলা খুলনা টাইগার্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ঝুলিতে রয়েছে ৮ পয়েন্ট। তারা শনিবার নিজেদের ম্যাচে জিতে গেলে পয়েন্ট হবে ১০, বাদ পড়ে যাবে ঢাকা।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বরিশালের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে মাত্র ১২৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করাতে পেরেছে ঢাকা। জবাবে মুনিমের ২৫ বলে ৩৭ ও সাকিবের ২৯ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ভর করে ২৭ বল আগেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে বরিশাল।
ঢাকার করা ১২৮ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে আরও একবার হতাশ করেন ক্রিস গেইল। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১১ বলে মাত্র ৭ রান করেন তিনি। তবে অপরপ্রান্তে ঝড় তোলেন মুনিম। তার ব্যাট থেকে আসে ৩টি করে চার ও ছয়ের মার।
দলীয় ৪৬ রানের মাথায় ৩৭ রান করে ফেরত যান মুনিম। এরপর আর উইকেটের পতন ঘটতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। এ দুজনের ৮.৪ ওভারে অবিচ্ছিন্ন ৮৩ রানের জুটিতে সহজেই ম্যাচ জিতে যায় বরিশাল।
শুরুটা বেশ রয়েসয়েই করেছিলেন সাকিব। প্রথম ১৪ বলে তার নামের পাশে ছিল মাত্র ১২ রান। সেখান থেকে পরের ১৫ বলে আরও ৩৯ রান করেছেন এ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সবমিলিয়ে ৬ চার ও ২ ছয়ের মারে ২৯ বলে ৫১ রান করেন তিনি। শান্ত অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ২৮ রান করে।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ২১ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। এর সঙ্গে ব্যাট হাতে ঝড়ো ফিফটির সুবাদে ম্যান অব ম্যাচ পুরস্কার জিতেছেন তিনিই। এ নিয়ে টানা পাঁচ ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতলেন সাকিব।
এর আগে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু তার সিদ্ধান্তের যথার্থতা প্রমাণ করতে পারেনি দলের ব্যাটাররা। চলতি আসরে দারুণ ফর্মে থাকা তামিম ইকবালই কেবল পেয়েছেন রানের দেখা।
অনেক সমালোচনার পর অবশেষে নাইম শেখকে ওপেনিংয়ে ফিরিয়েছিল ঢাকা। কিন্তু ৯ বল খেলে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফিরে গেছেন এ বাঁহাতি ওপেনার। তিন নম্বরে নামা জহুরুল ইসলাম অমি ৭ বল খেলে করতে পেরেছেন মাত্র ২ রান।
হতাশ করেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং শামসুর রহমান শুভও। এ দুজনের ব্যাট থেকেই আসে সমান ৮ বলে ৩ রান করে। টপঅর্ডারের বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতার ভিড়ে তামিম খেলেছেন ৫০ বলে ৬৬ রানের ইনিংস। শুভাগত হোম অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ২১ রান নিয়ে।
বিপিএলের চলতি আসরে তামিমের এটি পঞ্চম পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস। যেখানে একটি সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। এছাড়া এক ম্যাচে আউট হয়েছেন ৪৬ রান করে। আজকের ৯ চার ও ১ ছয়ে সাজানো ৬৬ রানের ইনিংসের মাধ্যমে চলতি আসরে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৪০০ রান পূরণ করেছেন তামিম।
বরিশালের পক্ষে বল হাতে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শফিকুল ইসলাম, ডোয়াইন ব্রাভো ও মেহেদি হাসান রানা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *