সোহেল আহমদ ::  সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে এক ব্যক্তির মৃত্যুর হয়েছে।  মারা যাওয়া যুবকের নাম উজির মিয়া (৩৫)। এরই জের ধরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।

 

সোমবার (২১ শে ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাগলাবাজার এলাকায় স্থানীয় লোকজন একত্রিত হয়ে লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এলাকাবাসী।

 

 

এদিকে অবরোধকারীদের শান্ত করতে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ারুজ্জামান ঘটনাস্থলে গিয়ে তোপের মুখে পড়েন। পরে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি। এসময় ইউএনওর গাড়ি লাশের ওপর দিয়ে চলে গেছে- এমন কথা প্রচার হলে স্থানীয় জনতা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

 

 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার শত্রুমর্দন গ্রামের উজির মিয়াকে থানার এসআই দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও এএসআই আক্তারুজ্জান তাকে নিজ বাড়ি থেকে সন্দেহজনক আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়।

 

 

পরের দিন বুধবার তাকে সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়ে যাওয়া হলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে গুরুতর আহত উজির মিয়াকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

 

এদিকে, সোমবার (২১শে ফেব্রুয়ারী)  সকালে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে  মারা যান উজির মিয়া। এরপর তার মরদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী।

 

 

মৃত উজির মিয়ার ছোট ভাই ডালিম মিয়া জানান, তার ভাইকে পুলিশ ধরে নিয়ে থানায় নির্যাতন করে। পরদিন তাকে একটি চুরির মামলায় আদালতে পাঠালে জামিনে মুক্ত হন। এরপর থেকে উজির মিয়া গুরুতর অসুস্থ হন। এ অবস্থায় সোমবার সকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।

স্থানীয়রা  জানান, উজির মিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনে চিহ্ন রয়েছে- যা তারা ভিডিও করে রেখেছেন।

 

 

উজির মিয়ার ভাতিজা ইমরান আহমদ বলেন, ‘আমার চাচাকে থানার এসআই দেবাশীষ, এসআই প্লাটন কুমার সিংহ ও এএসআই আক্তারুজ্জান চুরি মামলা দিয়ে আটক করে জেল হাজতে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করেছে। আমরা দোষীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ তুলব না।’

 

 

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আসামিকে আটক করা হয়েছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। একদিন হাজতে রেখে পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি চলে যান। এরপর কোনো একদিন হয়তো তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। শুনেছি আজকে সকালে নাকি তার মৃত্যু হয়েছে।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *