ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সিলেট জেলা কৃষক লীগকে ধ্বংস করতে নানা ষড়যন্ত্র করছেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার খানম এমপি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সিলেট ৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব। জেলা কৃষক লীগের কমিটিকে তাদের পকেটে ঢুকাতে তারা গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শামছুল ইসলাম। সিলেট জেলা কৃষক লীগকে রক্ষায় তিনি সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে সিলেট জেলা কৃষক লীগ আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শামছুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শামছুল ইসলাম বলেন, সিলেট জেলায় বাংলাদেশ কৃষক লীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। কিন্তু তারা কৃষক লীগকে ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছেন। তারা সিলেট জেলা কৃষক লীগকে বিভাজন ও সাংগঠনিক সংকট সৃষ্টির জন্য অপতৎপরতা শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, সিলেট জেলার বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে অগঠনতান্ত্রিক ও মনগড়া কার্যক্রম শুরু করেছেন ওই তিন নেতা। শামছুল ইসলাম বলেন, বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষকলীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলন করতে জেলা কমিটি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রোববার তারিখ নির্ধারণ করে দেয়। সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করে দিলেও জেলা কমিটিকে না জানিয়ে সম্মেলনের ব্যানার ও পোস্টার তৈরি করা হয়। যা বাংলাদেশ কৃষক লীগের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, এই ব্যানার ও পোষ্টারে উদ্বোধক হিসেবে জেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহ নিজাম উদ্দিন, প্রধান অতিথি হিসেবে সিলেট -৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব ও অতিথি হিসেবে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম দেয়া হয়। পোস্টারে জেলা কমিটির আর কারো নাম দেয়া হয়নি। উদ্বোধক হিসেবে জেলা সভাপতির নাম দিলেও তিনি এ বিষয়ে কোন কিছুই জানেনা। এর প্রেক্ষিতে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ, সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুমা স্মৃতি এমপি, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মোল্লা ও সিলেট বিভাগের সাংগঠনিক টিমের প্রধান সহসভাপতি দেওয়ান জয়নাল আবেদীনকে মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করা হলে বিষয়টি তারা দেখছেন বলে আমাদেরকে জানান।
তাৎক্ষণিকভাবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট ৩ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব ও বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে বিষয়টি জানানো হয়।
সম্মেলনের তোড়জোড় দেখে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ককে সম্মেলন স্থগিত করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের কপি কেন্দ্রীয় সকল নেতৃবৃন্দের নিকট হোয়াটসআপের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।
শামছুল বলেন, এছাড়া এ বিষয়ে বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, কৃষক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদককে এই সম্মেলনের মাধ্যমে যাতে সিলেট জেলা কৃষকলীগে বিভাজন সৃষ্টি না হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বলেন। এমন সম্মেলন হলে সিলেটে অন্যান্য সহযোগী সংগঠনেও এর প্রভাব ফেলবে এবং সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
সকল উপজেলা কৃষক লীগের সম্মেলন করে জেলা কমিটির মাধ্যমে জেলা সম্মেলন করার জন্য কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে তারা পরামর্শ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় আঞ্চলিক কমিটির ভার্চুয়াল সভা গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহসভাপতি দেওয়ান জয়নাল আবেদীন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শের স্বপক্ষে বক্তব্য দিলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আহমেদুর রব, প্রচার সম্পাদক আবুল হোসেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খসরু নোমান, সিলেট সদর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আঙ্গুর মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাচা মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *