তানজীম হাসান সাকিবকে কাভার ড্রাইভ করে সীমানার বাইরে পাঠিয়ে ৪ রান নিয়েই মুঠো পাকিয়ে বাতাসে ঘুষি দিলেন নুরুল হাসান সোহান। ততক্ষণে সতীর্থরা ডাগআউট থেকে ছুটে এসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন তাকে। শেখ জামালের আজ উৎসবে ভাসার দিন। সোহানের হার না মানা ৮১ রানের ইনিংসের কল্যাণে আবাহনীকে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ধানমন্ডির ক্লাবটি।
শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং নেয় আবাহনী। শেখ জামালের বোলারদের নৈপুণ্যে ৬ উইকেটে ২২৯ রানের বেশি করতে পারেনি মোসাদ্দেক হোসেনের দল। রান তাড়া করতে নেমে ৪৭ ওভারে ৪ উইকেট হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে শেখ জামাল।
ডিপিএলে এটিই শেখ জামালের প্রথম শিরোপা। ১৪ ম্যাচে সর্বোচ্চ ২৪ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শেখ জামাল। লিগে এখনো ১ ম্যাচ বাকি আছে তাদের।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শেখ জামাল। বিপদের মুহূর্তে দলের কাণ্ডারি হয়ে দাঁড়িয়ে যান সোহান। এরপর মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে। সোহান মাঠে আসার পর ইমরুল কায়েস ১৫ ও রবিউল ইসলাম ৩ রান করে ফেরেন। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে পারভেজ রসুলকে নিয়ে শুরু হয় সোহানের লড়াই।
দুই জনে থিতু হয়ে উল্টো আবাহনীর উপর চাপ বাড়িয়ে দেন। তাদের জুটি থেকে আসে ৭২ রান। নাজমুল হোসেন শান্তর বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন রসুল। তিনি ৪০ বলে ৩৩ রান করেন। কিন্তু সোহানকে টলানোর মতো যেন কোনো বোলার ছিল না আবাহনীতে।
এক প্রান্ত আগলে রাখেন। দৃষ্টিনন্দন চার-ছয়ে মাতিয়ে রাখেন শের-ই-বাংলা। ৬১ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে দেখা পান ফিফটির। রসুল ফিরলে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে শুরু হয় সোহানের ২য় যুদ্ধ। দুজনে ৮২ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন। ৮ চার ও ২ ছয়ে সোহান ৮১ বলে ৮১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আর ৪ চার ও ২ ছয়ে জিয়া খেলেন ২৬ বলে ৩৯ রানের দারুণ ক্যামিও।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং নেয়া আবাহনী ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসে। মোহাম্মদ নাঈম শেখ ১৬ রান করে ফেরেন পারভেজ রসুলের শিকার হয়ে। লিটন দাস ৪ আর নাজমুল হোসেন শান্ত ৮ রান করে আউট হন। এরপর প্রতিরোধ গড়েন তৌহিদ হৃদয় আর আফিফ হোসেন ধ্রুব।
তবে ৩৯তম ওভারের শেষ বলে মিড অনে শেখ জামাল অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হন হৃদয়। ৭৫ বলে ৪ চারে ৫৩ রান করেন তিনি। তারপর সাইফ হাসানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন আফিফ। ৪৪ বলে ২৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মোসাদ্দেক হোসেন থিতু হয়েও ফেরেন ১৫ রান করে।
১৫৪ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর আবাহনীকে রক্ষা করেন সাইফউদ্দিন আর জাকের আলী অনিক। দুজনে ৭৫ রানের জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন অপরাজিত থেকে। তাতে ২২৯ রানের লড়াকু স্কোর পায় আবাহনী। শেখ জামালের হয়ে ২ উইকেট নেন জিয়াউর রহমান।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *