ঢাকা টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বৈঠক হয় বিসিবি কর্মকর্তাদের। মুমিনুলকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এক প্রকার হয়ে যায় সেদিনই। সাকিব টেস্টের নেতৃত্বে ফিরতে রাজি হওয়ায় বিসিবি কর্মকর্তারা খুশি হন। টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন এবং ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসকে একটি শর্তও জুড়ে দেন বাঁহাতি এ অলরাউন্ডার, মুমিনুলকে স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছাড়তে হবে।

গতকাল মুমিনুল স্বেচ্ছায় নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেও ভেতরের ঘটনা অন্য। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার দিনই বাঁহাতি এ ব্যাটারকে সরে যেতে বলা হয়। সেদিনই বিষয়টি একজন কোচকে জানান মুমিনুল। আগে থেকেই নেতৃত্বের পালা বদলের সিদ্ধান্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে না গিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে গতকাল দেশে ফেরেন সাকিব।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে তৃতীয়বারের মতো সাকিবকে টেস্ট অধিনায়ক ঘোষণা করা হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে লম্বা সময় পর সহ-অধিনায়কও পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেস্ট দল। লিটন কুমার দাসকে করা হতে পারে সহ-অধিনায়ক। লিটনকে সহ-অধিনায়ক করার প্রস্তাব আগে থেকেই ছিল। দেরিতে হলেও সেটা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যদিও সাকিবকে অধিনায়ক করার বিষয়টি গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে জানাননি বিসিবি সভাপতি।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফি বিন মুর্তজার সহ-অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। নড়াইল এক্সপ্রেস প্রথম টেস্টে ইনজুরিতে পড়ায় সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়। পরের সিরিজ থেকে নিয়মিত অধিনায়ক হন তিনি। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের পর নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় সাকিবকে। এরপর ২০১৮ সালে মুশফিকের কাছ থেকে দ্বিতীয়বার টেস্টের নেতৃত্বে বুঝে নেন সাকিব। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে শেষ টেস্ট খেলে বাংলাদেশ।

সাকিবকে টেস্ট অধিনায়ক করা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়া হলে বিসিবি সভাপতি পাপন বলেন, ‘এখনই বলা কঠিন। অনেকগুলো বিষয় আগে সমাধান করতে হবে। সবার আগে সাকিবের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এরপরও কোচিং স্টাফ এবং ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সব শেষে বোর্ড মিটিংয়ে চূড়ান্ত করা হবে।’

মুশফিক কোনো ফরম্যাটেই অধিনায়ক হতে চান না। ওয়ানডে নিয়েই থাকতে চান তামিম ইকবাল। সে ক্ষেত্রে মুমিনুলের বিকল্প পাওয়া যাচ্ছিল না। সাকিব সে সমাধান করে দেন। বিসিবি অনেক দিন ধরেই সাকিবকে নিয়ে পরিকল্পনা করছিল। এ জন্য ৩৫ বছর বয়সী এ অলরাউন্ডারকে তিন সংস্করণের চুক্তিতেই রাখা হয়। মুমিনুলের টানা ব্যাটিং ব্যর্থতা নেতৃত্বে পরিবর্তনের সুযোগ করে দেয়। যদিও বিসিবি সভাপতি মিডিয়াকে জানান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর পর্যন্ত মুমিনুলকে রেখে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মুমিনুল বিতর্কের সুযোগ না দিয়ে নিজে থেকেই সরে গেলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *