জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :: জগন্নাথপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও গত এক মাস ধরে গ্রামীণ সড়কগুলো চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। এছাড়া ভয়াবহ বন্যায় সড়কে ১৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ১৭ জুন জগন্নাথপুর উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। জগন্নাথপুরের সবক’টি সড়ক বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়। বিছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। সম্প্রতি বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও গ্রামীণ সড়কের বিভিন্ন স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কের অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন গ্রামীণ সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় গর্তে পানি জমে পুকুরে রূপান্তরিত হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। কোনো কোনো ভাঙণে স্থানীয় উদ্যোগে মেরামত এবং বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। ফলে বেশকয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডি আওতাধীন এ উপজেলার ৮৪টি সড়কে বিভিন্ন মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে প্রায় ১৫ থেকে ২০টি সড়কে ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরাসরি যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভবেরবাজার—নয়াবন্দর—কাঠালখাইর সড়কের সৈয়দপুর এলাকায় পানি উঠে সড়কটি তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। পানি কমলেও সড়কের ছোট ছোট গর্ত আরও বড় আকার ধারণ করছে। জগন্নাথপুর—শিবগঞ্জ— বেগমপুর সড়কের অধিকাংশ পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা গেছে। ফলে যানচলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এছাড়া কলকলিয়া ইউনিয়নের কলকলিয়া বাজার থেকে চন্ডিঢর সড়ক, মজিদপুর থেকে এরালিয়া সড়ক, রানীগঞ্জ ইউনিয়নের শিবগঞ্জ থেকে রানীগঞ্জ সড়ক, শিবগঞ্জ বাজার থেকে দোস্তপুর সড়ক, আলমপুর থেকে রৌয়াইল সড়ক, পাটলী ইউনিয়নের লামা রসুলগঞ্জ—লাউতলা সড়ক, কেশবপুর থেকে রসুলগঞ্জ বাজারের সড়ক, আশারকান্দি ইউনিয়নের নয়াবন্দর থেকে দাওরাই সড়কে ভাঙ্গনের শিকার হয়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে কয়েকটি সড়কে স্থানীয় উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরিসহ মেরামত করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ৮৪টি সড়কে সর্বমোট ১৮০ কিলোমিটার সংস্কার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। এছাড়া ২২ মিটার দৈর্ঘের জগদীশপুর ব্রিজটি বন্যার পানির স্রোতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি এবং আরও ৬ টি ব্রিজের অ্যাপ্রোচ মেরামতের জন্য ৫০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সোহরাব হোসেন বলেন, দুই দফা বন্যায় এ উপজেলার সড়কগুলোতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিছু কিছু সড়কে যান চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *