ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বিশ্ব রেকর্ড গড়তে সাঁতরে ২৮১ কিলোমিটার পাড়ি দিতে নামা একুশে পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ৮৩ কিলোমিটার যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এতে তাকে সাঁতার শেষ করতে হয়েছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার সকাল ৬টায় সিলেটের কিন ব্রিজ সংলগ্ন চাঁদনীঘাট থেকে সাঁতার শুরু করেন সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র। ৭১ বছর বয়সী ক্ষিতীন্দ্রের সুরমা নদী থেকে যাত্রা শুরু করে কিশোরগঞ্জের ভৈরব ফেরিঘাটে পৌঁছার কথা ছিল।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে জাতীয় সাঁতারু ক্ষিতীন্দ্র বৈশ্যকে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩টায় তিনি সাঁতার কেটে অসুস্থবোধ করলে সুনামগঞ্জের আমবাড়ী বাজারস্থ সুরমা নদীর ঘাটে এসে যাত্রাবিরতি করেন। পরে সঙ্গে থাকা টিম সদস্যরা তাকে নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ফলে গিনেস বুকে নাম লেখানো হলো না ক্ষিতীন্দ্রের। তার বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে।
বিশ্বনাথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও ক্ষিতীন্দ্রের সঙ্গে থাকা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি তপজিত ভট্টাচার্য বলেন, ঠান্ডাজনিত কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল ক্ষিতীন্দ্রের। পরে আয়োজক সংগঠন ও তিনি সাঁতার শেষ করার ঘোষণা দিলে তাকে নৌকায় তুলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় তাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। অক্সিজেন দেওয়ার পর তিনি কিছুটা স্বাভাবিক হন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল জানান, ২৮১ কিলোমিটারের মধ্যে সুরমা নদীর ১৪৪ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার, ধনু নদের ৮৪ দশমিক ৩১ কিলোমিটার, ঘোড়াউত্রা নদীর ৩৪ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ও মেঘনা নদীর ১৮ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন ক্ষিতীন্দ্র। সাঁতার চলাকালে তিনি পানিতে খাওয়া—দাওয়াসহ যাবতীয় কাজ করেন। সফলভাবে সাঁতার সম্পন্ন করলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতির জন্য আবেদন করার কথা ছিল তার।
সাঁতার যাত্রায় থাকা নৌ—বাহিনীর এসআই আনোয়ার জানান, সিলেটের কিন ব্রিজ সংলগ্ন সুরমা নদীর চাঁদনীঘাট থেকে সাঁতার শুরু করেন ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য।
ক্ষিতীন্দ্রের এই উদ্যোগে সহায়তা করছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ড। এ ছাড়াও সার্বিকভাবে তাকে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, নৌ পুলিশ ও সিলেট সিভিল সার্জনের একটি দল।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান ক্ষিতীন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি পাস করা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র সাঁতার কেটে এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে ৪টি পুরস্কার পেয়েছেন।
