ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বিজ্ঞান লেখক, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী সন্দেহে হাসনাত শেখ (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। উত্তর প্রদেশের সাহারানপুরের মান্ডি থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আল-কায়েদার সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে খবর, গত জুলাই মাসের ১ তারিখে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরু থেকে জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ফয়সাল আহমেদ ওরফে সাহেব মজুমদার ওরফে সহিদ মজুমদার নামে এক যুবককে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের দাবি, ২০১৫ সালের ১২ মে খুন হওয়া বাংলাদেশের সিলেটের বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত চার আসামির অন্যতম এই ফয়সাল আহমেদ বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। বেঙ্গালুরুতে পরিচয় বদলে একটি পোশাক কারখানার কর্মচারী হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই মেলে হাসনাত শেখের খোঁজ।
কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই যুবকের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কালিয়াচকের সুজাপুর এলাকায়। বছর কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশে পড়াশোনা করতে যান তিনি। সেখানেই আল-কায়েদা জঙ্গি সংগঠন ‘আকিস’-এর নেতারা তার মগজধোলাই করে। হাসনাতের বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বলে দাবি করেছে গোয়েন্দারা। তাদের দাবি পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সম্প্রতি জঙ্গি মডিউল তৈরির চেষ্টা করছে আল-কায়েদা।
গত কয়েক বছরের মধ্যে বহু যুবক ও তরুণের মগজধোলাই করে তাদের জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ করা হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের পিছে হাসনাত শেখের ঠিক কী ভূমিকা ছিল, ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় তার ভূমিকা এবং জঙ্গিগোষ্ঠীর হয়ে কী কাজ করত সে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিকে এই খবর পাওয়ার পরই মালদার সুজাপুরের গ্রামজুড়ে থমথমে পরিবেশ। ওই যুবকের মা জানান, তার ছেলে সাহারানপুরে মৌলভি খবর শিক্ষা নিতে সেখানকার মাদরাসায় ভর্তি হয়েছিল। এই যুবকের ছোটবেলা কাটে স্থানীয় গ্রামে। স্থানীয় মাদরাসা থেকে লেখাপড়া করার পর সে বর্ধমানের একটি মাদরাসায় ভর্তি হয়। এরপর যায় উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে। তবে সে আন্তর্জাতিক উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে তার টেরও পাইনি গ্রামবাসী থেকে পরিবারের সদস্যরা, এমনটাই দাবি তাদের।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন আল-কায়েদা জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ডায়মন্ড হারবার থানার দেউলপোতা এলাকার বাসিন্দা সমীর হোসেন শেখকে। ডায়মন্ড হারবার থানার আবদালপুরের একটি মসজিদে ইমামতি করত সে। অভিযোগ রয়েছে, ইমামতির আড়ালেই জঙ্গিমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিল সমীর।
