সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুরুল হুদা মুকুটকে দল থেকে অব্যাহতির একদিনের মাথায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনকে পাল্টা বহিস্কারের দাবি জানিয়েছেন বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল হুদা মুকুট। মঙ্গলবার দুপুরে সুনামগঞ্জ শহীদ জগৎজোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সোমবার নুুরুল হুদা মুকুটকে ‘অব্যাহিত’ দেয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন। জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক অ্যাড. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ¦ল স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমকে পাঠিয়ে এই তথ্য জানানো হয়। এই অব্যাহতি প্রদানকে অগঠনতান্ত্রিক ও এখতিয়ার বর্হিভুত দাবি করে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাল্টা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনেন নুরুল হুদা মুকুট।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হুদা মুকুট বলেন,‘ সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় শৃঙ্খলা অমান্য করার কারণে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যহতি প্রদান করেছেন। দলের গঠনতন্ত্রের ৪৬ ধরার (ঙ) উপধারায় বলা আছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শানোর জন্য সাধারণ সম্পাদক পোস্টাল রেজিস্টেশন যোগে নোটিশ দেবেন। আমার ক্ষেত্রে তারা সেটি করেননি। ৪৬ (ঞ) ধারায় বলা হয়েছে, সংগঠনের দায়িত্বশীল কাউকে অব্যাহতি দিতে হলে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। উর্ধ্বতন শাখার অনুমোদন লাগবে, তারা সেটিও করেন নি। গঠনতন্ত্র না মেনে আমাকে অব্যাহতির চিঠি দিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এ ধরণের কর্মকা- অগঠনতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক ও এখতিয়ার বর্হিভূত। জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী না হবার জন্য কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল কেউ বা জেলা কমিটির কেউই আমাকে অনুরোধ করেন নি। কোন নির্দেশও দেননি। আমার ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য এখন দলের অব্যাহতির প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।’
নুরুল হুদা মুকুট আরও বলেন,‘ গত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির ইমন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার সাথে কাজ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে যদি সাংগঠনিক এ্যাকশন নেওয়া হয় তাহলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আগে বহিস্কার করা হোক। ’
নুরুল হুদা মুকুটের অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন বলেন,‘ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন না করতে তাকে (নুরুল হুদা মুকুট) ও মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন নি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন। দলের বিরোধীতা করায় গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ দলের বিরোধীতা করলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা গঠনতন্ত্রে সুষ্পষ্ট উল্লেখ আছে। আমরা আশা করব তার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক শংকর চন্দ্র দাস, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল করিম, মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সিতেশ তালুকদার মঞ্জু, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. আজাদুল ইসলাম রতন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী, সদস্য অমল কর, অ্যাড. কল্লোল তালুকদার চপল, দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশররফ হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দীপঙ্কর কান্তি দে প্রমুখ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *