ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে সিলেটে সংহতি সভা করেছে ‘আমরা একাত্তর’। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ৫১তম অধিবেশনে বাংলাদেশের জেনোসাইডকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে সোমবার বিকেলে সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের সামনে এই সংহতি সভা হয়।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার আরশ আলীর সভাপতিত্বে সংহতি সভা সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সংগঠক উজ্জ্বল মেহেদী। বক্তব্য দেন, নর্থ ইস্ট বাংলাদেশের উপাচার্য ডক্টর ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস ও আমরা একাত্তর-এর সমন্বয়ক অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী।
সংহতি সভা থেকে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন ও আবির্ভাব বর্বর পাক সেনাবাহিনী, শাসক বর্গ ও তাদের এদেশীয় সহযোগী দালালদের দ্বারা পরিচালিত ও সংঘটিত জেনোসাইডের নিষ্ঠুর রক্তধারায় স্নাত ও অবর্ণনীয় অমানবিক নির্যাতন ও বাঙালি জাতিসত্ত্বার বিনাশের প্রচেষ্টায় কলংকিত। ১৯৭১ সালের ভয়াবহ জেনোসাইড এর জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বীকৃতি নিয়ে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট নানাবিধ সংগঠন নানাভাবে প্রয়াসী। কিন্তু ইতিহাসের এই দীর্ঘ পথপরিক্রমাকালে আমরা এই লক্ষ্যে বেশি এগোতে পারিনি। ২০১৭ সালে আমাদের মহান জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৭১ জেনোসাইডের সূচনা অপারেশন সার্চ লাইটের কালোরাত স্মরণে ২৫ মার্চকে জাতীয় জেনোসাইড দিবস ঘোষণা করে ও জাতিসংঘ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভের প্রচেষ্টা নেওয়ার অঙ্গীকার করে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মহান সংসদকে অভিনন্দন জানাই।’
আমরা একাত্তরের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বিষয়ে সরকার বা আমাদের নাগরিক সমাজ বেশিদূর এগোতে পারিনি। দেশপ্রেমিক নাগরিক সমাজের এ বিষয়ে এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ২০২২ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ৫১তম অধিবেশনের ৩ নম্বর এজেন্ডায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সংঘটিত ও সংগঠিত পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর বর্বর ও বিভিষীকাময় জেনোসাইড নিয়ে একটি বিবৃতি জাতিসংঘের স্ট্যাটাস পাওয়া নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক বাংলাদেশী প্রবাসীদের সংগঠন গ্রহণ করাতে সক্ষম হয়। আলোচ্যসূচি থাকলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে সে আলোচনা ওই অধিবেশনে উত্থাপিত হতে পারে নি।’
তারা বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন কার্যালয়ে উপাচার্যের উপস্থিতিতে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি’র সক্রিয় অংশগ্রহণে UNHRC এর উক্ত অধিবেশনে ১৯৭১ জেনোসাইড স্বীকৃতির দাবিতে করণীয় বিষয়ক একটি বহুপাক্ষিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত সকলেই এ ব্যাপারে যথাসাধ্য চেষ্টা করার ব্যাপারে আন্তরিক অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সেসময় সামগ্রিক প্রস্তুতির সংকটেই হয়তো আমরা জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এর সেই সভায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে পারিনি। তবুও হতাশ না হয়ে আমরা অপেক্ষা করছি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির।’
জেনোসাইড-এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি-দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সভায় একাত্ম হন, সাংস্কৃতিক সংগঠক এনামুল মুনীর, নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল করিম কিম, রাজনীতিবিদ আনোয়ার হোসেন সুমন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছামির মাহমুদ, যুব ইউনিয়ন নেতা খায়রুল কবির, আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, লেখক আশীষ দে, ব্যবসায়ী তাজুল সোহাগ প্রমুখ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *