ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা জমা আছে শিশুর অ্যাকাউন্টে: ময়মনসিংহ ডিসি
ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেট ফেটে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতিমার ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকা ‘রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক শিশু ও দুই সন্তানের সহায়তা হিসাবে’ জমা হয়েছে। সোনালী ব্যাংক ত্রিশাল শাখায় এই টাকা জমা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টায় ডিসি ময়মনসিংহ (DC Mymensingh) নামের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এতথ্য জানান জেলা প্রশাসক।
ফেসবুক পোস্টে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক উল্লেখ করেন, “ট্রাস্টি বোর্ড, বিআরটিএ তহবিল থেকে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পিতা-মাতার নবজাতক শিশুর অভিভাবককে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত পাঁচ টাকার ক্রস চেক সোনালী ব্যাংক, ত্রিশাল শাখায় ‘রত্না আক্তার রহিমার নবজাতক শিশু ও অপর দুই সন্তানের সহায়তা হিসাব’-এ জমা আছে।”
‘এই টাকার পাশাপাশি অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের প্রদত্ত টাকাও ওই অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে। অ্যাকাউন্ট নম্বর ৩৩২৪১০১০২৮৭২৮, সোনালী ব্যাংক, ত্রিশাল শাখা। এই একাউন্ট পরিচালনা করছেন শিশুর অভিভাবক দাদা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ত্রিশাল। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। যৌক্তিক প্রয়োজনে শিশু ও তার পরিবারের কল্যাণের জন্য এই অ্যাকাউন্ট থেকে খরচ করা হবে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এই পোস্ট দেওয়া হয়নি। ওই শিশুর টাকা কোথায় আছে, তা মানুষকে জানানোর জন্য দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার কোনো কপি এখনো পাননি বলেও জানান তিনি।

এরআগে দুপুরে সড়কে জন্ম নেওয়া শিশুর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানাতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। একই সঙ্গে, এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১০ জানুয়ারি দিন ঠিক করেছেন আদালত।

গত ১৬ জুলাই ত্রিশাল পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এক দুর্ঘটনায় মারা যান ত্রিশালের রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার স্ত্রী রত্না বেগম (৩০) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (৬)। মৃত্যুর আগে রত্না বেগম সড়কেই এক নবজাতকের জন্ম দেন। পরবর্তীতে তার নাম রাখা হয় ‘ফাতেমা’।
জাহাঙ্গীর আলম অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে এসেছিলেন। সঙ্গে তাদের মেয়ে সানজিদাও ছিল।
ওই ঘটনায় জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ত্রিশাল থানায় একটি মামলা করেন। প্রথমে তিনি রত্নার রেখে যাওয়া নবজাতকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। একটি বেসরকারি হাসপাতালে কয়েক দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর গত ১৯ জুলাই শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর ২৯ জুলাই শিশুটির দাদা বাবুল ও অন্য স্বজনরা রাজধানীর আজিমপুরে শিশুদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ছোটমণি নিবাসে রেখে যান মেয়েটিকে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *