আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ করছে ইরানের জনগণ। পশ্চিম এশিয়ার দেশটিতে চলমান এই বিক্ষোভে মূলত নারীরাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আর এই সাহসিকতার কারণে ইরানের নারীদের ‘হিরোস অব দ্য ইয়ার’ খেতাব দিয়েছে মার্কিন সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন।
বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস। টাইম ম্যাগাজিন বলেছে, আন্দোলন এবং লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকার বিষয়ে অঙ্গীকারের জন্য ইরানের নারীরা তাদের ‘হিরোস অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন। মূলত ইরানের নারীরা তাদের মর্যাদা নিয়ে বাঁচার অধিকারের জন্য লড়াই করছেন এবং নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
মূলত গত সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বিক্ষোভে টালমাটাল ইরান। হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী কুর্দি ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহসা আমিনি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, মাহসা আমিনিকে তেহরানে নৈতিকতা পুলিশ তার চুল সঠিকভাবে না ঢেকে রাখার অভিযোগে আটক করেছিল। তার মৃত্যুর পর থেকেই ইরানজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে।
ইরানের কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ওই তরুণী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তবে ভুক্তভোগীর পরিবার এই বিষয়ে বিরোধিতা করে বলেছে, তাকে নৈতিকতা পুলিশ মারধর করেছে।
বিবিসি বলছে, নারী-নেতৃত্বাধীন এই বিক্ষোভ ইরানের ৩১টি প্রদেশের ১৫০টিরও বেশি শহর এবং ১৪০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে এটিকে পশ্চিম এশিয়ার এই ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরানের নারীদের ২০২২ সালের নায়ক হিসাবে নির্বাচিত করার কারণ নিয়েও কথা বলেছে টাইম ম্যাগাজিন। মার্কিন এই সাময়িকী বলছে, ইরানের নারীরা যে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা এটিই তুলে ধরছে যে, তারা শিক্ষিত, উদার, ধর্মনিরপেক্ষ এবং দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। তারা আগের প্রজন্মের নারীদের চেয়ে খুব আলাদা।
এছাড়া চলতি বছর টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *