ডায়ালসিলেট রিপোর্ট ::  জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ ১০ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বিএনপি।

শনিবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ ১০ দফা দাবির ঘোষণা করেন। এর আগে সংসদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বিএনপির ৭জন সংসদ সদস্যরা। তারা হলেন – বগুড়া-৬ আসনে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উকিল আবদুস সাত্তার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশীদ, বগুড়া-৪ আসনে মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমিনুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে জাহিদুর রহমান জাহিদ ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে রুমিন ফারহানা।

 

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্গঠনসহ ১০ দফা দাবিগুলো হলো –

১. বিএনপির ১০ দফার মধ্যে রয়েছে : ১. বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ভোটবিহীন,গণতন্ত্রহরণ, লুটেরা, ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ।

২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর আলোকে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার বা অন্তর্র্বতীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।

৩. নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ সরকার বা অন্তর্র্বতীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার, বর্তমান  অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন। সেই নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসেবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করতে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল; খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলীয় সব নেতাকর্মী, সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রাজনৈতিক কারাবন্দিদের অনতিবিলম্বে মুক্তি।

৪. বেগম খালেদাজিয়াসহ সকল বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, পেশাদানিত্বের সাথে দ্বায়িত্বপালনকারী সকল মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সকল মিখ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সকল রাজনৈতিক কারাবন্দীদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। দেশে সভা, সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা। সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দলের কোনো ধরনের হস্তক্ষপ বা বাধা সৃষ্টি না করা। স্বৈরাচারি কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করা।

 

 

 

৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮, সন্ত্রাস দমন আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪’সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী আইন বাতিল করা।

৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও পানিসহ জনসেবা খাতের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিল।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেট মুক্ত করা।

৮. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ার বাজারসহ রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠন।

 

 

৯. দুর্নীতি চিহ্নিত করে অতিদ্রুত যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ; গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে প্রাতিষ্টানিক শৃঙ্খলা ও পেশাদ্বারিত্বের সাথে দ্বায়িত্ব পালনে উপযোগী করার লক্ষ্যে সরকারি হস্তক্ষপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *