হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ৪ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও বোনাস পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চা-শ্রমিকেরা। বুধবার উপজেলার ইমাম-বাওয়ানী চা-বাগানের ৬০০ শ্রমিক এই কর্মসূচি পালন করেন। একই দাবিতে তারা দুই দিন ধরে এই আন্দোলন করে আসছেন।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত ইমাম-বাওয়ানী চা-বাগান একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন বাগান। এখানে ৩০০ নিয়মিত শ্রমিকসহ ৬০০ শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকেরা প্রতি সপ্তাহে মজুরি পেয়ে থাকেন। কিন্তু এ বাগানের শ্রমিকেরা চার সপ্তাহ ধরে তাদের মজুরি ও বোনাস পাচ্ছেন না। মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মজুরির বিষয়ে কথা বলছে না তারা।
তাই ইমাম-বাওয়ানী চা-বাগানের শ্রমিকেরা বুধবার কাজে যোগ না দিয়ে বেলা ১১টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বাগানের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এ সময় আন্দোলনকারী কয়েকজন শ্রমিক বলেন, বাগান কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই চার সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের বেতন–ভাতা বন্ধ রেখেছে। বাগানের ব্যবস্থাপক পদ থাকলেও দুই বছর ধরে এ পদে কেউ নেই। বর্তমানে দু-তিনজন স্টাফ মালিকের প্রতিনিধি হয়ে বাগান পরিচালনা করে আসছেন। এখন সেই স্টাফদের কাছে গেলে তারা বেতন–ভাতা দেওয়ার বিষয়ে টালবাহানা করছেন। যে কারণে তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি তুজন রবি দাস, সাধারণ সম্পাদক রতন কানু, সহসভাপতি সন্তোষ ভাক্তি, কুকিলা ভাক্তি প্রমুখ।
এছাড়া মঙ্গলবার একই দাবিতে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশের বাধার কারণে তারা মহাসড়কে অবস্থান নিতে পারেননি।
বালিশিড়া ভ্যালির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি চা–শ্রমিকনেতা সুভাষ দাশ বলেন, চার সপ্তাহ ধরে মজুরি পাচ্ছেন না শ্রমিকেরা। এ নিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের নিয়ে বসতেই রাজি হচ্ছে না। যে কারণে তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। দু-এক দিনের মধ্যে সমাধান না হলে তারা অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনে যাবেন। একই দাবিতে শুক্রবার ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শ্রমিকেরা।
বাগানের পরিচালনা দায়িত্বে থাকা টিলা ক্লার্ক শ্যাম নারায়ণ ভর বলেন, ‘বাগানে দুই বছর ধরে কোনো ম্যানেজার নেই। কর্তৃপক্ষ আমাদের কয়েকজনকে দায়িত্ব দিয়ে রেখেছে। প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সমাধান না করলে স্থানীয়ভাবে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার সুযোগ নেই।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *