স্পোর্টস ডেস্ক :: এতদিন শোনা যেত গুঞ্জন আকারে। আড়ালে-আবডালে কেউ কেউ বলতেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মধ্যে গ্রুপিং আছে। অন্তর্কোন্দল আছে। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে পুরো দলের ওপর এবং দলীয় পারফরম্যান্সের ওপর। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, অনেক জেতা ম্যাচও হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

 

২০২১ ওমান-আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের যাচ্ছেতাই পারফম্যান্সের পরও এ ধরনের গুঞ্জনের কথা শোনা গিয়েছিলো; কিন্তু এ নিয়ে মুখ খোলার সাহস করেনি কেউ। কেই বা খুলবে? কেউ তো আর দলের মধ্যে কোন্দল, গ্রুপিংয়ের কথা স্বীকার করে নিজে খারাপ হতে চাইবে না।

 

কিন্তু এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অভ্যন্তরে যে গ্রুপিং রয়েছে, এ নিয়ে যে কোন্দল তৈরি হয় এবং দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব ও তামিমের মধ্যে যে সম্পর্ক ঠিক নেই, দু’জনের যে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ- তা নিয়ে কথা বলেছেন খোদ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনই।

 

ক্রিকেট বিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ক্রিকবাজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে নিজেই বাংলাদেশ দলের ভেতর গ্রুপিংয়ের এমন ভয়াবহ তথ্য দিলেন পাপন। জানালেন, তিনি নিজে চেষ্টা করেছেন সাকিব-তামিমের বিরোধ মেটানোর; কিন্তু পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন এ দু’জনের বিরোধ মেটাতে।

 

কোন্দল, গ্রুপিংয়ের কারণে যে বাংলাদেশ দলের ড্রেসিং রুম স্বাস্থ্যকর নয়, তা নিজেই স্বীকার করলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট। গ্রুপিংকেই এখন বাংলাদেশ দলের মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি।

 

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘গ্রুপিংই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এটাই এখন সবচেয়ে বড় বাস্তবতা। আর কোনো কিছু নিয়ে সমস্যা নেই। আমি দলের মধ্যে এই গ্রুপিং নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তিত। মাত্র কিছুদিন আগেই আমি এ ব্যাপারে শুনেছি। এমনকি বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়েও, আমি তাদের হোটেলে না থেকেও যা দেখেছি এবং যা শুনেছি, তা সত্যিই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, এসব কী করে সম্ভব! আমাদের ক্রিকেটর ভবিষ্যৎ ভালো করতে হলে, এসব এখনই বন্ধ করতে হবে। আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে যে, দলের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কোনো সুযোগ নেই।’

 

সাকিব এবং তামিমের মধ্যে বিরোধ সমাধানের চেষ্টা করেছেন পাপন। কিন্তু তিনি তাতে ব্যর্থ হয়েছেন। অকপটে এ কথা স্বীকার করেছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘এটা কোনো স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুম নয়, এটা গ্যারান্টি দিতে পারি। এমন নয়, আমি সাকিব তামিমের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করিনি। আমি দু’জনের সঙ্গেই কথা বলেছি এবং বুঝতে পেরেছি, তাদের সমস্যা সমাধান করা এ মুহূর্তে সহজ কাজ নয়। এটা আমার অবজার্ভেশন।’

 

‘দু’জনকেই একই কথা বলেছি, জানি না তোমাদের মধ্যে কী হচ্ছে। তবে যখন কোনো ম্যাচ বা সিরিজ তোমরা খেলছো, এসব বিষয় (বিরোধ) যেন সামনে না আসে। দু’জনই সে নিশ্চয়তা দিয়েছে। বাইরে তারা কী করছে জানি না, তবে ড্রেসিং রুমে যেন তারা কথা বলে।’

 

বিসিবি সভাপতি বলেছেন, এই মুহূর্তে গ্রুপিং বন্ধ করা উচিৎ। তা না হয় হলো। কিন্তু দুই সিনিয়র সাকিব এবং তামিমের মধ্যে যে বিরোধ, তাতে তারা যদি একে অপরের সঙ্গে কথাই না বলে, তাহলে বিষয়টা কেমন দেখা যাবে? ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কী ঠিক থাকবে?

 

পাপন বলেন, ‘তাদেরকে অবশ্যই মাঠের মধ্যে একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এমনকি ড্রেসিংরুমেও। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ খুবই খারাপ। যদিও কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। তবে, এই ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই আমি এর পরিবর্তন চাই। বিশেষ করে, ড্রেসিংরুমে তাদের সম্পর্কটা যেন স্বাভাবিক থাকে। বাইরে তারা কী করছে, কেমন সম্পর্ক, সেটা আমার চিন্তার বিষয় নয়।’

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *