সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারপিট করে হত্যার দায়ে স্বামী মো. রাসেল মিয়াকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মো. রাসেল মিয়া জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের সফিক মিয়ার ছেলে। এছাড়াও পৃথক দু’টি ধর্ষণ মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন এই আদালতের বিচারক।

রায়ের আদেশে জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসাবে পাবেন বলে আদেশে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট নান্টু রায়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে জামালগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের রেছনা বেগমের মেয়ে মোহনমালা বেগমের সাথে বিয়ে হয় একই গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার। বিয়ের পরে মো. রাসেল মিয়া প্রায়ই স্ত্রীর নিকট যৌতুক দাবি করে স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন। এ নিয়ে স্ত্রী আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেছিলেন। মামলা দায়েরের পর মো. রাসেল মিয়া আর যৌতুক দাবি করবে না ও নির্যাতন করবে না মর্মে অঙ্গীকার করে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যান। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুক দাবি করে আবারও নির্যাতন শুরু করে। এরপর গত ২০১৮ সালের ২৮ জুন মোহনমালাকে তার স্বামীর ঘর থেকে মৃত উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় মোহনমালার মা বাদী হয়ে রাসেল ও তার মা-বাবার বিরুদ্ধে জামালগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারকার্য শেষে স্বামী রাসেল মিয়ার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রাসেলের বাবা মো. সফিক মিয়া ও মা কবিফুলকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।

এদিকে পৃথক ধর্ষণ মামলার অভিযোগে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ডলুরা গ্রামের সমছু মিয়ার ছেলে খলিল আহমেদ (৪৫) ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে আব্দুর রহমান আব্দুলকে (২৯) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাকির হোসেন। একই সাথে তাদেরকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *