সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: অনেক নাটকীতার পর এবার প্রকাশ্যে রাজপথে এসে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। এতদিন তাকে নিয়ে নানা গুঞ্জন চললেও প্রার্থী হওয়া নিয়ে তিনি মুখ খুলেননি। উপরুন্তু ছিলেন দলীয় চাপে। এবার বিএনপির একাংশের নেতাকর্মীকে নিয়ে রাজপথে নেমে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিতের পাশাপাশি তুলে ধরেছেন নির্বাচন নিয়ে তার সংশয়ের আশংকা। সেই সঙ্গে প্রশাসনের রদবদল করে নির্বাচনে নীল নকশার অভিযোগও তুলেছেন।
সিলেটের মানুষকে ছবক দেয়ানোর জন্য বাহির থেকে এনে নেতৃত্ব দেওয়া হচ্ছে, যা সিলেটের মানুষ পরিহার করবে বলেও হশিয়ারি দিয়ে তিনি। বক্তব্যে তিনি মেয়র পদে ক্ষমতাসীন নেতাদের বঞ্চিত হওয়া এবং বহিরাগত নেতৃত্ব এনে চাপিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
মে দিবস উপলক্ষে সোমবার দুপুরে নগরের রেজিস্টারি মাঠে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের শোভাযাত্রা এবং সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আছি। অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব।’
নগরীতে সোমবার মে দিবসের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘কোন প্রেক্ষাপটে সিলেটের নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি তা ২০ মে সমাবেশ করে স্পষ্ট করব।’
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সিটি নির্বাচনও বর্জন করেছে দলটি। এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কী না তা নিয়ে শুরু থেকেই ধোঁয়াশা ছিল।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আরিফুল হক লন্ডনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও দেখা করে আসেন। তবে প্রার্থী হওয়া-না হওয়া নিয়ে এতোদিন স্পষ্ট করে কিছু বলছিলেন না আরিফ। ফলে তাকে নিয়ে গুঞ্জন আরও বাড়ছিল। অবশেষে রোববার অনেকটা স্পষ্ট করেই প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন আরিফ।
আরিফ বলেন, ‘বিএনপি কেন নির্বাচনে যাবে না তার ব্যাখ্যাসহ কারণ এবং কেন সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব- এ দুটি বিষয়ে জানাতে ২০ মে রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ আহ্বান করেছি। ওই সমাবেশে সবকিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জনগণের কাছে তুলে ধরব।’
প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও এবারের সিটি নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে উল্লেখ করেছেন মেয়র আরিফুল। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম বাতিল করা হয়েছে। অথচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।’
সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ইভিএম তাদের মেকানিজমের অন্যতম একটা বিষয়। এতে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও কারসাজি করে আরেকজনকে জিতিয়ে দেয়া হবে। তাই এটি একটি প্রহসনের নির্বাচন হতে যাচ্ছে।’
আরিফুল হক চৌধুরী অভিযোগ করেন, ‘সিলেটের দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি নষ্ট করতে প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। তবে আধ্যাত্মিক নগরে এমন অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবে।’
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণ হবে। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হচ্ছেন দলটির যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
সিলেট সিটিতে ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সবশেষ দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। এবার তিনি মেয়র প্রার্থী হলে হেট্রিক মিশনে অংশ নেবেন।