আসামি অর্ধশতাধিক
শাল্লা প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার কার্তিকপুর গ্রাম সংলগ্ন সাতপাড়া বাজারের পাশে একটি ঘর তৈরিকে কেন্দ্র করে বিগত ২৭ জুনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমান ও হেলাল মিয়া নিহতের ঘটনায় আরেকটি মামলা শাল্লা থানায় দায়ের করা হয়। এই মামলায় মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে ৩৪ জন আসামি ও অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে কার্তিকপুরের নিহত হেলাল মিয়ার চাচাতো বোন মিনারা বেগম বাদী হয়ে শাল্লা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ঐ মামলায়ও মুজিবুর রহমান (৫৫)কে প্রধান আসামি করে ৩৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৫/৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
এর পূর্বে, একই সংঘর্ষের ঘটনায় ২৮ জুন পুলিশ এসল্ট মামলায় প্রধান আসামি কার্তিকপুরের মুজিবুর রহমানসহ ১৯ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৩০/৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পুলিশের করা মামলায় তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। অপরদিকে ঐ সংঘর্ষে ১নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার কার্তিকপুরের নিহত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী মিনা বেগম বাদী হয়ে একই গ্রামের নিজাম উদ্দিনকে প্রধান করে ৩৬ জন ও অজ্ঞাতনামা আরো ১৩/১৪ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা শাল্লা থানায় দায়ের করা হয়েছে। ঐ মামলায়ও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তনাধীন রয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা চলমান।
প্রসঙ্গত, ২৬ জুন বিকেলে ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে উপজেলার কার্তিকপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও ইউসুফ আলী গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা সালিস বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করেন এমনকি শাল্লা থানার পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। পরের দিন ২৭ জুন সকাল ৮টায় ৪ জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে সাতপাড়া বাজারে যান এসআই আলীম উদ্দিন। সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে তর্ক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে বুকের মধ্যে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে কার্তিকপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান (৪৯) নামের একজনের মৃত্যু হয়। তিনি মুজিবুর রহমানের চাচা অত্র ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। অন্যদিকে একই গ্রামের কুদ্দুস মিয়ার ছেলে হেলাল মিয়া (২৫) নামে আরেকজন নিহত হন। তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পথে হেলাল মিয়ার মৃত্যু হয়। তিনি ইউসুফ আলীর চাচাতো ভাই।
এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে শাল্লা থানার সাব-ইন্সপেক্টর আলীম উদ্দিন সহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এই খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক শাল্লা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম পুলিশের ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ৯ রাউন্ড গুলি ছুঁড়েন। সংঘর্ষে আহতরা বিভিন্ন মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।