মনজু বিজয় চৌধুরী॥ মৌলভীবাজারের কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে পানি ঢুকেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় উপকারভোগীরা ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের নিচু এ জায়গাটি মাটি ভরাট করে উঁচু না করে ঘর নির্মাণ করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এ ছাড়া ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি থাকায় এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকা থেকে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীরা বলছেন, উপহারের ঘরগুলো নিচু জায়গায় করা হয়েছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে এমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। আশপাশে পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু পানিতে ডুবে আছে প্রকল্পের ঘরগুলো। অথচ এই প্রকল্পের কাজের সময় স্থানীয় লোকজন জায়গাটি উঁচু না করে ঘর নির্মাণ করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা চিন্তা না করেই অপরিকল্পিতভাবে তাদের জন্য আবাসনের এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
৩ জুলাই সোমবার দুপরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার হাসানপুরে ভূমিহীনদের নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের আবাসন এলাকায় গিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরের ভিতরে ও বাহিরে থাকতে দেখা যায়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশপাশের নিচু জায়গাতেও বৃষ্টির পানি আটকা পড়ে আছে।
আজ রবিবার (২রা জুলাই) বিকেলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার হাসানপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২৮টি ঘরের মধ্যে ২২টি ঘরের ভিতরে ও বাইরের দিকে পানি জমেছে। সেখানকার উপকারভোগীরা ঘর ছেড়ে আশপাশের উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আনকার মিয়া বলেন, সরকারের কোনো দোষ নাই। এটা নিচা জাগা (নিচু জায়গা)। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আমরার সবার ঘরেতে পানি ঢুকছে।আমরা রান্না করারও সুযোগ না। হাঁটাচলার রাস্তা, টিউবওয়েল, গোসলখানা পর্যন্ত পানিত ডুবি আছে। আপনারা চেয়ারম্যান, মেম্বারকে বলবা। আমরা প্রশাসনের সহযোগিত কামনা করছি।
রুপিয়া বেগম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, এই জায়গাটা যদি একটু উচুঁ হতো তাহলে আজকে এই অবস্থা হতো না। পানি নিষ্কাশন না হলে আমাদের কষ্ট আরও বাড়বে। ইউএনও, ডিসি স্যার সবাই এসে দেখলে বুঝবেন আমরা কী রকম অসুবিধায় আছি। পানি বৃদ্ধির ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারে না কেউ।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: শরীফ উদ্দিন জানান আজ সোমবার সকালে
সদর উপজেলার হাসানপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিদর্শন করেন। আমি এখনও স্বারকলিপি পাইনি। পেলে বলতে পারবো। এখন বর্ষাকাল থাকায় এই মুহূর্তে কিছু করা যাচ্ছে না। তবে আমরা কি করা যায় চেষ্টা করে দেখবো। আগামীকাল একজন কর্মকর্তা যাবেন তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ চেয়েছেন।